ক্যাম্পাস

চবিতে যেতে স্বস্তি, ফিরতে ভোগান্তি

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৭ মে ২০২৩ , ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ

ঝালকাঠী জেলার বাসিন্দা মাহফুজ আলম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভর্তি পরীক্ষা দিতে বরিশাল থেকে ঢাকা হয়ে ট্রেনে এসে পৌঁছান চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে চড়ে ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। 

মাহফুজ আলম জাগো কণ্ঠকে বলেন, ঢাকা থেকে ট্রেনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটলে চড়ে ক্যাম্পাসে আসছি। সেজন্য প্রায় ছয় ঘণ্টার জার্নিতে তেমন কষ্ট লাগেনি। কিন্তু বাসে আসলে কষ্টটা বুঝা যেতো। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম শহর থেকে চবিতে আসা-যাওয়ার জন্য শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করায় খুবই উপকার হয়েছে। নতুবা অচেনা জায়গায় আসতে হয়তো আরও ভোগান্তি পোহাতে হতো।

শুধু মাহফুজই নয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে আগত ভর্তিচ্ছুদের সুবিধার্থে শাটল ট্রেনের বিশেষ শিডিউলে খুশি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা। তারা বলেন, দেশের আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয় কিন্তু পরিবহন সেবা কেউ দেয়নি এভাবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ভর্তিচ্ছুদের নির্বিঘ্নে বসবাসের সুযোগ দেওয়াতেও খুশি তারা।

তবে চবিতে আসতে খুব একটা ভোগান্তি পোহাতে না হলেও ফেরার সময় দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। বসার সিট নয়, দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া দুষ্কর হয়ে যায় তখন। উপায়ান্তর না দেখে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়ে বসেন অসংখ্য ভর্তিচ্ছু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেনে চড়ে আসতে পেরে উচ্ছ্বসিত ভর্তিচ্ছু ফেনীর সাইকা খানম বলেন, চট্টগ্রাম থেকে খুব দূরে নয় আমাদের বাড়ি। এলাকার অনেকেই এখানে পড়েন। অনেক আত্মীয়-ভাইবোন আছেন। তাদের কাছে শাটল ট্রেনের গল্প শুনেছি কত শত বার। কত কত ছবি দেখেছি, তখন স্বপ্ন জাগত কখন যে এই ট্রেনে চড়তে পারবো। এবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে শাটল চড়তে পারলাম। ভালো লাগলেও ভয় কাজ করছে এখন, আসলাম কতো আশা নিয়ে যদি চান্স না পাই।

dhakapost

ভীড় ঠেলে ছেলেরা উঠতে পারলেও মেয়েদেরকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে বেশি। নাটোর থেকে আসা রকিফ উদ্দিন নামের এক অভিভাবক বলেন, আমি মেয়েকে নিয়ে নাটোর থেকে ঢাকা হয়ে এসেছি। আসার পথে বেগ পোহাতে হয়নি। তবে ফেরার পথে বিকেল ৫টার ট্রেনে উঠতেই পারিনি। মেয়ে না থাকলে হয়তো কোনোভাবে ভেতরে চলে যেতাম। বাধ্য হয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আগতদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শাটল ট্রেন চালুর ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। সেই লক্ষ্যে পরীক্ষা চলাকালীন ট্রেনের শিডিউল প্রকাশ করা হয়। শিডিউল অনুযায়ী মোট ৯ দফায় শাটল ট্রেন চট্টগ্রাম নগরীর বটলতলী স্টেশন থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে এবং ক্যাম্পাস থেকে শহরের উদ্যেশ্যে ছেড়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম শিকদার জাগো কণ্ঠকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় আগতদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আমরা শাটল ট্রেনের বিশেষ শিডিউলের ব্যবস্থা করেছি। ১৬ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত এই সার্ভিস চলবে। প্রতিদিন শাটল ট্রেন ৯ বার করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসবে এবং যাবে। আশা করি আগত ভর্তিচ্ছু এবং অভিভাবকদের যাতায়াতের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

বরাবরের মতো এবারের ভর্তি পরীক্ষাও ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরই মধ্যে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। চার ইউনিট ও দুই উপ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৪ হাজার ৯২৬টি আসনের বিপরীতে চূড়ান্তভাবে আবেদন করেছেন ২ লাখ ৫৬ জন ভর্তিচ্ছু। প্রতি আসনের জন্য লড়ছেন প্রায় ৪১ জন ভর্তিচ্ছু।

জাগোকণ্ঠ/রুমান হাফিজ/পিআর

আরও খবর: