ক্যাম্পাস

র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে হাসপাতালে শিক্ষার্থী

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ৫ এপ্রিল ২০২৩ , ৪:৩৩ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা জয়া র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরে জান্নাতের বিরুদ্ধে হলে ডেকে নিয়ে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ করছেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

সোমবার (৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের নূরুন্নাহার বেগম হলের ২৩৪ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে প্রায় ৪৫ মিনিট  রুমের মেঝেতে পড়েছিলেন। জ্ঞান ফিরলে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান বরারব একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ওই লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, আমি জাকিয়া সুলতানা জয়া, ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। গত বৃহস্পতিবার ফিশারিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী নূরে জান্নাত আপু আমাকে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে বলেন। পরে আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে গত রোববার দুপুর ২.৫০ মিনিটে হলে আসি। হলে প্রবেশ করার পর আমাকে সিএসি বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আদর ভাইকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু উক্ত অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। পরদিন রোজ সোমবার সকাল ৯:৩০ মিনিটে আমাকে ও এনিকে (প্রথম বর্ষে ১ম সেমিস্টার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী) হলের ২৩৪ নম্বর রুমে যেতে বলা হয় এবং উনার সঙ্গে দেখা করে ক্লাসে ঢুকতে বলা হয়। পরে ক্লাস মিস দিয়ে আমি ও এনি হলে যাই।

dhakapost
ভুক্তভোগী ছাত্রী

আমাকে আবার ওই একই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরে আমাকে আমার জুনিয়র শিক্ষার্থী এনির সামনে ১০ মিনিট কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এর ১ ঘণ্টা পর একটু একটু জ্ঞান এলে শিক্ষার্থীরা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থী জয়া এ ঘটনায় আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জয়া বলেন, আমাকে হলে যে বিষয়ের জন্য ডাকা হয়েছে আমি সে বিষয় সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। কেন আমাকে হলে নিয়ে এরকম মানসিক নির্যাতন করা হলো তা আমি জানি না। আমি অসুস্থ থাকার পরও বেশ কয়েকবার আমাকে হলে ডাকা হয় এবং সেখানে নিয়ে মানসিক নির্যাতন করা। এক পর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি সেখানে। এ বিষয়ে আমি প্রক্টর বরাবর  লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি  চাই। বঙ্গমাতা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা আর দ্বিতীয়বার যেন না ঘটে এটাই আমার প্রশাসনের কাছে চাওয়া।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী এনি জানান, আমি নূরে জান্নাত আপু বা অন্য কারো কাছে কোন বিষয়ে বিচার দেইনি। সে দিনই হলে গিয়ে তাকে (নূরে জান্নাত) আমি প্রথম দেখি। এর আগে তাকে আমি চিনতামও না। হলে আমাকে এবং জয়া (ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী) আপুকে কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এক পর্যায়ে জয়া আপু জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমার পরীক্ষা থাকায় কিছুক্ষণ পর হল থেকে আমি চলে আসি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নূরে জান্নাত বলেন, সেই দিন তো আমার মাথা ব্যথা ছিল। তাই মেডিকেল সেন্টার থেকে কিছু নাপা নিয়ে চলে আসি। এ ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আলম খান বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না বা কিছু শুনিনি। এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।

আরও খবর: