আন্তর্জাতিক

ভূমিকম্প : ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হয়ে সন্তান জন্ম দিলেন নারী

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ

গত সোমবার তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়েন ফাতেন আল ইউসুফি নামের এক ইয়েমেনি নারী। প্রায় ১০ ঘন্টার চেষ্টার পর তাকে উদ্ধার করেন উদ্ধারকারীরা। আর উদ্ধার হওয়ার পর একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ফাতেন। তিনি তুরস্কের মালাতইয়ায় স্বামীর সঙ্গে থাকতেন।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

যখন ভূমিকম্প আঘাত হানে তখন ফাতেন ৩৯ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ওই সময় নিজের অনাগত সন্তানকে বরণ করে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। তখনই জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় তাকে।

আতঙ্ক, তৃষ্ণা ও নিজের অনাগত সন্তানকে নিয়ে ফাতেন যখন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিলেন তখন তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন পারিবারিক বন্ধু হিসাম। অন্যান্য উদ্ধারকারীদের সহায়তায় ফাতেনকে টেনে তুলতে সমর্থ হন তিনি। উদ্ধারের পর ইয়েমেনি এ নারীকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানেই সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন তিনি।

তবে এরপরই নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটি পান ফাতেন। তিনি জানতে পারেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে চাপা পড়ে তার ২৯ বছর বয়সী স্বামী বুরহান আল আলিমি মারা গেছেন। ভূমিকম্পের তিনদিন পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বুরহান মালাতইয়ার ইনোনু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যামিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

ফাতেন ২০১৪ সালে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ইয়েমেন থেকে তুরস্কে পাড়ি জমিয়েছিলেন। নিজ জন্মভূমি ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলায় সেখান থেকে পালিয়ে আসতে হয়েছিল তাকে। এরপর বুরহানের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। যখন নতুন করে নতুন এক দেশে নতুন জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখছিলেন তখন ভূমিকম্পে সব স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে।

ফাতেন বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা এখন আমার মেয়ের জন্য একটি ভালো জীবনের প্রত্যাশা করছি। কিন্তু সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। কেউ জানে না শেষটা কী রকম হবে।’

বর্তমানে নিজ মেয়েকে নিয়ে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের কাছের শহর কোসালিতে চলে এসেছেন তিনি। সেখানে তার মেয়েকে দেখতে এসেছিলেন তুরস্কে নিযুক্ত ইয়েমেনের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ তারিক।

ফাতেন তার মেয়ের নাম রেখেছেন লুজাইন। যার আরবি অর্থ রুপা।

এদিকে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪২ হাজার মানুষ মারা গেছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক মরদেহ চাপা পড়ে থাকায় এ সংখ্যা  আরও বাড়বে।

সূত্র: বিবিসি

আরও খবর: