দেশজুড়ে

ছেলের লাশ শনাক্তের পর বাড়িতে গিয়ে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেলেন বাবা

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ২:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ফরিদপুর সদরে ছেলের গলা কাটা লাশ শনাক্ত করে বাড়ি ফিরে গিয়ে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেলেন এক বাবা। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ব্যক্তির নাম আইয়ুব আলী শেখ (৬৫)। তিনি একটি যাত্রীবাহী বাসের সুপারভাইজার। তার তিন ছেলে ও দুই মেয়েসন্তান রয়েছে।

জানা গেছে, আইয়ুব আলীর মেঝ ছেলে রাজিব শেখ (২৮) ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাজিবের স্ত্রীর নাম রানী বেগম। রাজিব-রানী দম্পতির আহাদ শেখ নামে ছয় বছর বয়সী এক ছেলে ও তাইয়েবা নামে তিন বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।

আইয়ুব আলীর ছোট মেয়ের নাম বিউটি আক্তার। তার স্বামী মফিজ শেখ একজন ট্রাকচালক। তিনি ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা। বিউটি আক্তার গত শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে যমজ ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। মফিজ-বিউটি দম্পতির একটি মেয়ে রয়েছে।
অপারেশনের পর বিউটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

আইয়ুব আলী জানান, ছেলে রাজিব পার্শ্ববর্তী কোমরপুর এলাকার ইউনুস মন্ডলের একটি সিএনজি ভাড়া নিয়ে চালাত। শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ি থেকে সিএনজি নিয়ে বের হয়। তারপর সে আর বাড়িতে ফিরে না আসায় রোববার সকাল ৯টার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় সালথার মেম্বার গট্টি এলাকায় অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে সালথা থানায় ছুটে এসে ছেলের লাশ শনাক্ত করে রাতেই অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

তিনি আরও বলেন, মামলা করে গতকাল রাতে বাড়িতে ফিরে খবর পাই আমার মেয়ে বিউটি আক্তার ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। পরে আজ সোমবার সকাল ১০টায় মেয়ের জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। আর ছেলের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আজ বাদ জোহর জানাজা শেষে দাফন করা হয়। আমার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দুইজন চলে গেল।

সালথা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গত শুক্রবার রাতেই কোনো এক সময় সিএনজি চালক রাজিবকে গলা কেটে হত্যা করে তার লাশ সড়কের পাশে রেখে সিএনজিটি নিয়ে চলে যায় ছিনতাইকারীরা। এরপর থেকে ওখানেই পড়ে ছিল লাশটি।

রোববার সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে রাজিবের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে। প্রথমে মৃতের পরিচয় জানা যায়নি। রোববার রাত ১০টার দিকে ফরিদপুরের কানাইপুর ইউনিয়নের কোশা গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা আইয়ুব আলী শেখ ওই সিএনজি চালককে তার নিখোঁজ ছেলে রাজিব বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় আইয়ুব আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করে সালথা থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান দিলরুবা জেবা বলেন, বিউটি আক্তার দুটি শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন। তার (বিউটি) প্রেশার বেশি ছিল। প্রেশার বেশি হওয়ায় শুক্রবার রাতেই আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। তারপরও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

আরও খবর: