দেশজুড়ে

চার্জার ফ্যানের দামে গরম হাওয়া

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ৮ জুন ২০২৩ , ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

‘বিদ্যুৎ গেলে আর আসে না। এলে বেশিক্ষণ থাকে না। গরমের কারণে কোথায় শান্তি নেই। দুপুরে গোলস করে ওঠার পর শরীর ঘেমে যায়। এজন্য চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। কিন্তু এক সপ্তাহর ব্যবধানে ফ্যানের দাম ১ হাজার থেকে ১৫০০ টাকা বেড়েছে। তারপরেও কিনলাম। বাড়িতে ১৫ মাসের ভাগ্নে বেড়াতে এসেছে। গরমে কষ্ট পাচ্ছে।’

রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজারে বুধবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় চার্জার ফ্যান কিনতে আসা রায়হানুল ইসলাম এইভাবে কথাগুলো বলছিলেন।

রাজশাহীতে গরমের কারণে বেড়েছে ফ্যানের চাহিদা। এর মধ্যে বিক্রির শীর্ষে রয়েছে চার্জার ফ্যান। চার্জার ফ্যান বিক্রি বাড়ায় বাজারে এক ধরনের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। ফলে যে দোকানগুলোতে চার্জার ফ্যান রয়েছে তারাও বেশি দামে বিক্রি করছেন এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছুদিন থেকে সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও ঠিকমত বিদ্যুৎ থাকছে না। এমন অবস্থায় গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষ চার্জার ফ্যানের দিকে ঝুঁকছে। তাই চার্জার ফ্যান বিক্রি বেড়েছে। ফলে দোকানগুলোতে চার্জার ফ্যানের সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

বিকেলে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার এলাকার ইলেকট্রনিক্সের দোকানগুলোতে দেখা গেছে চার্জার ফ্যান কিনতে ক্রেতাদের ভিড়। বিদ্যুৎ ঠিকঠাক না থাকায় চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ফ্যানগুলো। দোকানগুলোতে অনেকটাই একদামে ফ্যানগুলো বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ ক্রেতাদের। দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ওয়ালটন ছাড়াও বিভিন্ন ব্যান্ডের মধ্য ডিফেন্ডার, ভিক্টর, মিয়াকো, নোভা ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন সাইজের এসব চার্জার ফ্যানের দাম ৩ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

চার্জার ফ্যান কিনতে আসা সাবিনা ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ আসতে সময় লাগে, কিন্তু যেতে সময় লাগে না। কিছুদিন থেকে রাজশাহীতে প্রচুর গরম পড়ছে। সাতে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।  এই গরমে চার্জার ফ্যান থাকলে বিদ্যুৎ যাওয়ার পরেও অনন্ত কিছুক্ষণ আরামে থাকা যাবে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট লাগে রাতে বিদ্যুৎ গেলে। তখন গরমে ঘুম ভেঙে যায়।

সামিউল ইসলাম বলেন, এই গরমে শিশুদের বেশি সমস্যা। বিদ্যুৎ গেলে তারা জেগে যচ্ছে। গরমের কারণে ঘুমাতে পারে না। বিদ্যুৎ গেলে যতক্ষণ পাখা দিয়ে বাতাস করা হচ্ছে ততক্ষণ ঘুমাচ্ছে। পাখা বন্ধ হলেই কান্না শুরু করে দিচ্ছে। বিদ্যুৎ একবার গেলে ঘণ্টা পার হয়ে যায় তবুও আসার নাম কথা নেই। এই চার্জার ফ্যানগুলো থাকলে অনন্ত শিশুরা আমারে ঘুমিয়ে থাকবে।

সাহেব বাজারের মেলেডি ইলেকট্রনিক্সের বিক্রেতা প্রদীপ বলেন, দোকানে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফ্যান। তারমধ্যে বিক্রিতে শীর্ষে রয়েছে চার্জার ফ্যান। তবে আমাদের দোকানে চার্জার ফ্যান নেই। যেগুলো ছিল সব বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকায় চার্জার ফ্যানের অর্ডার দিয়েছি। তারা আমাদের দিতে পাড়ছে না ফ্যান। আর ঢাকাতেই চার্জার ফ্যানের দাম ১৫০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা বেড়েছে। তবে রাজশাহীতে খুব অল্প সংখ্যাক দোকানে চার্জার ফ্যান রয়েছে।

আমান ইলেকট্রনিক্সের কর্মচারী সাইদুল ইসলাম বলেন, গরমের কারণে রাজশাহীতে চার্জার ফ্যান বিক্রি বেড়েছে। চার্জার ফ্যানের প্রচুর চাহিদা। দোকানগুলো তেমন চার্জার ফ্যান নেই। কেউ কেউ বেশি দামে ফ্যান বিক্রি করছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন। আগে ওয়ালটনের ৫ হাজার ৪০০ থেকে ৫ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হতো। কিন্তু এখন দাম ঠিকঠাক বলা যাবে না। কেনোনা সারাদেশের চার্জার ফ্যানের চাহিদা বেশি। তাই কোম্পানিগুলো দাম বাড়াতেও পারে।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক রাজিব খান বলেন, রাজশাহীতে বুধবার (৭ জুন) দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।

আরও খবর: