জাগোকন্ঠ ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ , ৩:৪৭ অপরাহ্ণ
মাহাবুব তালুকদার:
মাননীয় প্রাধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। তবে ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানার আরশিনগর ইউনিয়নের মাদবর কান্দি গ্রামে তেইশ একর অনাবাদি খাস জমিতে আবাদি করার জন্য কৃষকদের ইরি ব্লক করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খাদিজা বেগম(৫০) ও তার মেয়ে রাজিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকায় ৪০ বছর যাবত তেইশ একর সরকারি খাস জমি স্থানীয় কৃষকরা বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে জিবিকা নির্বাহ করতেন। তবে গেলো চার বছর যাবত স্থানীয় মৃত রমিজল মাঝীর ছেলে খোকন মাঝী সহ সামাদ মাঝি, মহোন উকিল ও মাহমুদ আলী মৃধা তার বংশিয়রা সেখানে কোন কৃষককে চাষাবাদ করতে দিচ্ছে না। সম্প্রতি ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন অনাবাদি হিসাবে খাস জমিটি নির্ধারিত করে একটি সাইনবোর্ড ও স্থানীয় কৃষকদের পূর্বের ন্যায় যে যার দখলে চাষাবাদ করে আসছে সেই ভাবে ইরি চাষাবাদ করে ফসল ফলানোর উদ্দ্যোগ নেন। গত ৩০ জানুয়ারী (সোমবার) সেখানে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আবুল হোসেন ও স্থানীয় মেম্বার নাজমুল ও চকিদার ও গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিত তে ইরি ব্লক করার জন্য ডিপ কল স্থাপন করার জন্য যায়। পরে সেখানে দুইজন মহিলা এসে ডিপ কল স্থাপন কাজে বাধা দেয় এবং উপস্থিত সকলকে নারি নির্যাতন মামলা করার হুমকি দেয়। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সুমন মাঝি ইরি ধান চাষের জন্য ডিপ কল স্থাপন কাজ করছিলেন। তবে খাদিজা বেগম ও তার মেয়ে রাজিয়া আক্তার শুরু থেকেই কাজে বাধা দিয়ে আসছে। তারা তাদের শরীরের জামা কাপড় নিজেই ছিড়ে উপস্থিত সকলকে নারী নির্যাতন মামলা দেয়ার হুমকি দেন। ঘটনা নিয়ন্ত্রনের জন্য সুমন মাঝি ৯৯৯ এ কল করলেও কোন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেননি। এর পর পরিস্থিতি খারাপ দেখে তহসিলদার সহ জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যম কর্মীরা স্থান ত্যাগ করে। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হলে তিনি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
স্থানীয় কৃষক সুমন মাঝী বলেন, আমরা জমিগুলাতে ধান চাষ করে খেতে চাই। কিন্তু খোকন মাঝী সহ তার মা খাদিজা বেগম ও তার বোন রাজিয়া আমাদের বাধা দিচ্ছে। টিউনো স্যারের নির্দেশ তারা মানছে না। ৪০ বছর ধরে এই জমি খাস হয়েছে। এখানকার কৃষকদের কাছ থেকে পুর্বের মালিকরা খাজনা নিত এত বছর। পরে এখন তিন বছর ধরে এখানে কাউকে ধান ক্ষেতি করতে দেয় না। তারা খামার করতে চায়। তাই আমরা কৃষকরা আন্দোলন করেছি। পরে টিউনো স্যার নিজে এসে এজমিতে কৃষকদের চাষ করার জন্য অনুমুতি দিয়ে যান। তবে আজকে খাদিজা ও রাজিয়া এসে তহসিলদার কে মানছে না আমাদের ব্লকের কাজ বাা দিয়ে পাইপ ধরে বসে আছে তারা। আর বিভিন্ন মামলার হুমকি দিচ্ছে তারা। প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন আমাদের এই জমিতে কৃষি কাজ করার সুযোগ যাতে করে দেয়।
চরকুমারিয়া ইউপি তহসিলদার আবুল হোসেন বলেন, পূর্বে এই জমির মালিক মাঝিরা ছিলো। তবে ৪০ বছর ধরে খাস খতিয়ানে জমিগুলা রয়েছে। শুনেছি এর মধ্য অনেকের কাছে মাঝিরা স্টাম্পে পজিশন বিক্রি করে ফেলেছে। সরকারি জায়গা বিক্রি করার কোন বিধান নাই। তার পরেও জায়গাটা আমাদের ইউএনও ও এসিল্যান্ড স্যার এসে যারযার পজিশন অনুযায়ী চাষাবাদ করার কথা বলেছে। আমি আজ স্যারের নির্দেশে আসছি এখানে টিউবওয়েল গাড়ার কাজে সহযোগীতা করতে। তবে দুইটা মহিলা এসে কাজে বাধা দেয় এবং আমাদের সকলকে মামলা হুমকি দেয়। দেখলাম সুমন মাঝি ৯৯৯ এ কল করে সাহায্য চাইলো তবে এখানে কোন পুলিশ সহায়তা করতে আসে নাই।তাই স্যারকে বলে আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি এবং স্যার এসে বাকি কাজের সমাধান করবে বলেছে।
এ বিষয় খোকন মাঝির সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এই গুলা আমাদের বাপ দাদার কালের জমি। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। একটা রায় আমাদের আদালত দিয়েছে।তবে আরো ২ টা রায় পেলে আমাদের নামে রেকর্ড হবে। তবে একটা পক্ষ আমাদের জায়গা দখল করতে চায়। আমরা ডিপ গাড়তে দিব না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন,মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে তাই আমাদের উপজেলার আরশিনগর ইউনিয়নে তেইশ একর অনাবাদি খাস জমিতে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আবাদের আওতায় আনার উদ্দ্যেগ নেই আমরা। এই এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য,পানিসম্পদ , মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপমন্ত্রী, জনাব একেএম এনামুল হক শামীম মহোদয়ের সার্বিক অনুপ্রেরণায় আমরা সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চেয়ারম্যান মেম্বারদের তত্তাবধানে উদ্দ্যেগটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেই। তবে শুনলাম সেখানে ইরি ব্লক করার সময় সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে দুইটা মহিলা কাজে বাধা দিচ্ছে। কেউ যাতে অবৈধভাবে কৃষি খাসজমি দখল না করতে পারে এবং এই উদ্যোগকে ব্যর্থ করতে না পারে তাই খুব দ্রুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বপ্ন ও প্রধান উদ্দ্যেগ বাস্তবায়ন করে কৃষকদের চাষাবাদের সুযোগ করে দেয়া হবে।