জাগোকন্ঠ ২৬ জুন ২০২২ , ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সোনার ছেলে-মেয়েরা, আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দিতে তোমরা তৈরি হও। তোমরা তোমাদের মেধার বিকাশ ঘটাবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দেশ যেন আর পিছিয়ে না থাকে, এগিয়ে যায়।
রোববার (২৬ জুন) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২২-এ সেরা মেধাবীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান চর্চা ও প্রযুক্তি জ্ঞানের মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
তিনি বলেন, মেধা অন্বেষণ একটি চমৎকার ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে অনেক সুপ্ত জ্ঞান বেরিয়ে আসবে, যা আমাদের দেশের আগামী দিনের উন্নয়নে কাজে লাগবে।
সরকার প্রধান বলেন, মনে রাখতে হবে দেশ এখানেই থেমে থাকবে না। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করে দিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর প্রায় ২১ বছর কোনো অগ্রগতি সাধিত হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষের অগ্রগতি সাধিত হয়।
তিনি বলেন, ড. কুদরত-ই-খুদাকে প্রধান করে বঙ্গবন্ধু একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। সেই কমিশন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করেছিল। সেটা জাতির পিতার হাতেও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নির্মমভাবে হত্যার পর সেই কমিশনের নীতিমালা আর কখনো আলোর মুখ দেখেনি। আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কারণ, তখন ‘মার্শাল ল’ জারি করা হয়। ‘মার্শাল ল’ দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হয়েছিল। এটাই হলো সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের বিষয়।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে মিলিটারি ডিকটেটররা মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র-অর্থ-মাদক তুলে দিয়ে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করে। এই বাহিনীর মাধ্যমে তারা ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার চেষ্টা করে। এ কারণে বছরের পর বছর সেশন জট হয়। ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ অনেকটা সীমিত হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, ২১ বছর পর ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। সরকার গঠনের পর থেকে আমাদের প্রচেষ্টা ছিল, ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা। গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে আসা, শিক্ষাকে আধুনিকায়ন করা। আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিই। পাশাপাশি গবেষণার ওপর আমি গুরুত্ব দিই। যেটা আমি লক্ষ্য করেছিলাম, গবেষণার জন্য বাজেটে আলাদা কোনো অর্থ দেওয়া হতো না। গবেষণায় উৎসাহ দেওয়া হতো না। শুধু নিয়ম মাফিক যেটুকু গবেষণা শুধু সেটুকুই হতো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে যখন আমি সরকার গঠন করি, প্রথম পর্যায়ে আমি ১২ কোটি টাকা দিয়েছিলাম গবেষণায়। বিশেষ করে তখন খাদ্যের জন্য আমরা যে পরনির্ভরশীল ছিলাম, ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল, সেখানে আমি কৃষি গবেষণাকে গুরুত্ব দিই। যাতে করে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে।
তিনি বলেন, আমি একটি কথা বলব, আমাদের ছেলে-মেয়েদের অনেক মেধা আছে। আমাদের নতুন প্রজন্ম প্রযুক্তির যুগে জন্মগ্রহণ করছে। তাদের ভেতরে অনেক মেধা। তাদের সেই সুপ্ত মেধাগুলো অন্বেষণ করতে হবে। সেই মেধা আগামী দিনের বাংলাদেশকে উন্নত করার কাজে ব্যবহার করতে হবে।