অপরাধ

“ভাগ্নেকে ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় বিক্রি করলেন “মামা

  জাগোকন্ঠ ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১:৪৩ অপরাহ্ণ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:

তিন তরুণকে ইতালিতে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে লিবিয়া নিয়ে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে আপন মামা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।

পরে মাফিয়ারা তাদের আটকে রেখে নির্যাতন ও পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হাতিয়ে নেয়। অবশেষে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে তারা দেশে পৌঁছালেও গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার ওই তরুণদের বাড়ি শরীয়তপুর সদর ও নড়িয়া উপজেলায়।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, ২০২২ সালের মার্চ মাসে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে শরীয়তপুর সদর উপজেলার আংগারিয়া ইউনিয়নের উত্তর ভাষানচরের তরুণ ফেরদাউস মাদবর, আল-আমিন ফকির ও নড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ নড়িয়ার রাকিব খানের কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয় স্থানীয় দালাল হাবিবুল বেপারি ও তার ছেলে ছলেমান বেপারি। আল-আমিন ও রাকিব সম্পর্কে হাবিবুল বেপারির আপন ভাগ্নে। ওই ভাগ্নের পরিবারের কাছ থেকে জমিও লিখে নেয় হাবিবুল। পরে তাদের লিবিয়া নিয়ে যায়।
সেখানে তাদের তুলে দেওয়া হয় মানব পাচারকারী চক্রের বাংলাদেশি দুই সদস্য মকবুল হোসেন ও মকুলের হাতে। তারা লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে দালাল চক্রের বাংলাদেশি সদস্যদের মাধ্যমে ফেরদাউস, আল-আমিন ও রাকিবের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে মোট সাড়ে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে দালাল হাবিবুল ও তার সঙ্গীরা মিলে ওই তরুণদের মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেন। মাফিয়ারা তাদের জিম্মি করে লিবিয়ার একটি স্থানে এগারো মাস আটকে রেখে নির্যাতন করে প্রতৈকের কাছ থেকে আরও ১৫ লাখ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে।

এরপর মাফিয়া চক্রের সদস্য মাদারীপুরের বাসিন্দা তুহিন ও তার সঙ্গীরা বাংলাদেশে তাদের পরিবারকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও কল করে জিম্মিদশা ও নির্যাতনের দৃশ্য দেখান। তারপর তুহিনের মামি বাংলাদেশের একজন মনিরা বেগমের মাধ্যমে মুক্তিপণের ১১ লাখ টাকা করে পরিশোধ করেন তিনটি পরিবার। এদিকে মাফিয়া চক্র টাকা পেয়ে ওই তরুণদের লিবিয়ার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সেখানে দুই মাস তিন দিন থাকার পর চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর ফেরদাউস, ২৯ নভেম্বর রাকিব ও আল-আমিন দেশে ফেরেন। তারা এখন অসুস্থ অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এবিষয় শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করায় আসামিদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আরও খবর: