দেশজুড়ে

বেঁকে যাওয়া রেললাইন ঠান্ডা করতে পানি ও কচুরিপানা থেরাপি

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:৩৯ অপরাহ্ণ

টানা ৩০ ঘণ্টা কর্মযজ্ঞ শেষে মেরামত করা লাইনসহ দুই জায়গায় আবারও বাঁকা হয়ে গেছে। তীব্র গরমে শনিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের দাড়িয়াপুর এলাকায় রেললাইনটি ফের বাঁকা হওয়ার খবর পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। 

এতে বেলা ১১টা থেকে আপলাইনে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আর এক লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় শিডিউল বিপর্যয় ঘটে বিলম্বে চলছে প্রায় সবকটি ট্রেন। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টার দিকে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার ঘটনা জানতে পারে রেল কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই আপলাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সদর উপজেলার হরণ এলাকায়ও রেললাইন বেঁকে যাওয়ার বিষয়টি নজরে আসে রেলওয়ে কর্মীদের।

dhakapost.com

এর আগে গত বৃহস্পতিবারও অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বেঁকে গিয়ে দাড়িয়াপুর এলাকায় ঢাকাগামী একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রেনের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। ওই ঘটনায় প্রায় ৫শ’ মিটার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ভেঙে যায় কংক্রিটের স্লিপার। দুর্ঘটনার প্রায় ৩১ ঘণ্টা পর রেললাইনের প্রয়োজনীয় মেরামত এবং কাঠের স্লিপার বসিয়ে আপলাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

বারবার একই জায়গায় লাইন বেঁকে যাওয়ার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কথা বলছে রেল কর্তৃপক্ষ। মূলত রেললাইনে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই বেঁকে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। শনিবার দাড়িয়াপুরে প্রায় ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় বেঁকে যায় রেললাইন। এ ঘটনার পর রেললাইন ঠান্ডা করতে পানি ঢেলে কচুরিপানা দেয় রেলওয়ের কর্মীরা। রেললাইনে তাপমাত্রা কমলে কাঠের স্লিপারগুলো বদলে কংক্রিটের স্লিপার বসানো হবে। এরপর পরীক্ষা শেষে চালানো হবে ট্রেন। তবে এজন্য আরও ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে আখাউড়া রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান আহমেদ তারেক জানান, দাড়িয়াপুরে দ্বিতীয়বার লাইন বেঁকে যাওয়ার পেছনে ভিন্ন কোনো কারণ নেই। অতিরিক্ত গরমেই বেঁকে গেছে। ডাউন এবং আপ- দুই লাইনেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কাঠের স্লিপারগুলো বদলে কংক্রিটের স্লিপার বসানো হচ্ছে। আর যেন লাইন না বেঁকে যায় এজন্য ধরনের সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, দুর্ঘটনা এড়াতে ডাউন লাইনে গতি কমিয়ে ট্রেন চলানোর নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার বেগে দুর্ঘটনাস্থল অতিক্রম করবে ট্রেনগুলো। এছাড়া অন্য স্থানগুলোতে গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ২০ কিলোমিটার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, তাপমাত্রা কমলে এবং কংক্রিটের স্লিপার লাগানোর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কাঠের স্লিপারগুলোর লোড নেওয়ার সক্ষমতা কিছুটা কম, যার জন্য বাঁকা হয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের ২৯ আগস্ট সদর উপজেলার ছোটহরণ এলাকায় অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বেঁকে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল।

আরও খবর: