দেশজুড়ে

কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানিবন্দি হবিগঞ্জ শহর

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৮ জুন ২০২৩ , ২:৩২ পূর্বাহ্ণ

শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হয়। এতে হবিগঞ্জ শহরের প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ সড়ক চলে গেছে পানির নিচে। শহরের অধিকাংশ বাড়ি-ঘরের সামনেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে হঠাৎ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শহরের বাসিন্দারা।

শনিবার (১৭ জুন) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ড্রেনগুলো ভরে গিয়ে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতলসহ ময়লা-আবর্জনা উপচে এসে রাস্তায় ভাসছে। হবিগঞ্জ শহরে গত কয়েক বছর ধরে জলাবদ্ধতা সমস্যা প্রকট হয়েছে।

গত বছর বর্ষায় মাত্র দুই ঘণ্টার বৃষ্টিতে পুরো শহর ডুবে গিয়েছিল। জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে শহরবাসী সোচ্চার হলেও নাগরিক কর্তব্য পালনে তারা ততটুকু সচেতন নন।

তবে পরিবেশবাদী ও সচেতন ব্যক্তিরা বহু বছর ধরে শহরের পুরাতন খোয়াই নদীসহ জলাধারগুলো ভরাট ও দখলের জন্যই বৃষ্টির পানি নির্গমনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়াকে জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন। আর পেছনে রয়েছে গত ২০ বছর ধরে অপরিকল্পিত নগরায়ন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়কের থানার মোড় থেকে শায়েস্তানগর ট্রাফিক পয়েন্ট পর্যন্ত পানিতে থৈ থৈ অবস্থা। সবচেয়ে বেশি পানি জমেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়ের সামনে। সেখানে চলাচলের জন্য নৌকা নিয়েও রাস্তায় নেমেছেন কেউ কেউ। এছাড়াও শহরের ব্যাক রোডের ফায়ার সার্ভিসের সামনে থেকে বেবিস্ট্যান্ড, পুরাতন পৌরসভার রাস্তা, সিনেমা হল এলাকার রাস্তা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।

শহরের সার্কিট হাউজ, গণপূর্ত অফিস, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাসভবন, পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়, সদর মডেল থানা, সরকারি স্টাফ কোয়ার্টার, প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং (পিটিআই), রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাঙ্গণ ডুবে গেছে। এছাড়াও ঘোষপাড়া, অনন্তপুর, ফায়ার সার্ভিস, স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা, ইনাতাবাদ, শায়েস্তানগর, জঙ্গল বহুলা, নিউ মুসলিম কোয়ার্টার, শ্যামলী এলাকাগুলোর বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকার উপক্রম অবস্থা।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, পুরাতন খোয়াই নদীসহ শহরের জলাধারগুলো দখল হয়ে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে বৃষ্টির পানি নির্গমন কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।

হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম জানান, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সারাদিন শহরের পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করতে গিয়ে পলিথিন ও প্লাস্টিকের বোতল দেখতে পেয়েছি। পানি নির্গমনের জন্য প্রতিটি ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে নাগরিকরা যদি ড্রেনকে ডাস্টবিন মনে করেন, তাহলে এই জলাবদ্ধতা থেকে কারোর পক্ষে মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। গত প্রায় এক দশকে হবিগঞ্জ শহরে বাসা-বাড়িসহ অনেক স্থাপনা অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। বৃষ্টির পানি শহর থেকে বের হওয়ার পথগুলো রুদ্ধ হয়ে গেছে।

আরও খবর: