দেশজুড়ে

কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ কর্মী বাবলু হত্যার বিচারের দাবিতে ফুঁসে উটেছে কুড়িগ্রাম জেলার ছাত্র সমাজ

  জাগোকন্ঠ ২ জুলাই ২০২২ , ১:২৪ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে শামীম আশরাফ বাবলু (২৩) নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে হত্যার অভিযোগে একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিটন মিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত সোমবার (২৮ জুন) সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলা ছাত্রলীগ ও স্থানীয়রা।

সেই ধারাবাহিকতায় আজ (০২ জুলাই) শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ এর সকল শিক্ষার্থী, মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ এর সকল শিক্ষার্থী, কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর সকল শিক্ষার্থী, খলিলগঞ্জ স্কুল ও কলেজ এর সকল শিক্ষার্থী সহ রাজারহাট উপজেলা ছাত্রলীগ, উলিপুর উপজেলা ছাত্রলীগ, চিলমারী উপজেলা ছাত্রলীগ,রৌমারী উপজেলা ছাত্রলীগ, চর রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগ, নাগেশ্বরী উপজেলা ছাত্রলীগ, ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগ, ফুলবাড়ি উপজেলা ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে আসামি দের গেরেপ্তার ও বিচারের দাবি তে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

ছাত্রলীগকর্মী হত্যার আসামিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতারা।

নিহত শামীম আশরাফ বাবলু সদরের বেলগাছা ইউনিয়নের নীলকণ্ঠ গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে ছাত্রলীগ কর্মী বাবলুর বাবার সঙ্গে স্থানীয় এক নারীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ এনে গত ২৮ জুন রাতে সালিশ বৈঠক করেন বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিটন মিয়া। বৈঠকে নিহত বাবলুর পরিবার উপস্থিত না হওয়ায় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা তাদের বাড়িতে ওই নারীকে জোর করে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাবলু ও তার পরিবারের লোকজন ওই নারীকে ঘরে প্রবেশে বাধা দেয়। পরে চেয়ারম্যানের হুকুমে অভিযুক্তরা বাবলু ও তার পরিবারের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ সময় মাথায় ও বুকে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন ছাত্রলীগ কর্মী বাবলু। তাকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পরদিন (২৯ জুন) সকালে রংপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দফায় দফায় বিক্ষোভ করে জেলা ছাত্রলীগ। পরে নিহতের বড় ভাই মশিউর রহমান বাবু বাদী হয়ে বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান লিটন মিয়াসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় রাশেদা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ-বিষয়ে জানতে চাইলে, কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক “মোঃ সাদ্দাম হোসেন” বলেন,একটি রাজনৈতিক প্রভাবশালি মহল প্রসাশন ও সাংবাদিকদের এই ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কমী বাবলুর হত্যকান্ডকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করতেছে, তারা ভাবতেছে অবৈধ ক্ষমতা দিয়েই সব দাবিয়ে রাখা যায়। কিন্তু তারা যানেনা, ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস, ছাত্রলীগের ইতিহাস লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস, ক্ষমতার অপব্যবহার করে কখনো ইতিহাস দাবিয়ে রাখা যায় না।সময় থাকতে আমরা তাদের কে সাবধান হয়ে যাবার জন্য অনুরোধ করছি।কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী বাবলু হত্যায় মদকদাতা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রতিটা আসামীকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে নতুবা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কুড়িগ্রাম জেলা শাখা সাধারণ ছাত্র/ছাত্রী সাথে নিয়ে কঠোরতম কর্মসূচি দেয়ার মাধ্যমে প্রকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে..

আবার এ-বিষয়ে, কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ রাজু আহমেদ বলেন,
আর কতো রক্ত ঝড়লে?
আর কতো শিক্ষক এর হাত পা কেটে নিলে?
আর কতো সাবেক ছাত্রলীগ নেতার কান কেটে নিলে?
আর কতো সাধারণ হোটেল শ্রমিক এর রক্ত ঝড়লে?
আর কতো মায়ের বুক খালি হলে?
আর কতো মায়ের অশ্রু ঝড়লে?
আপনারা ঐ সন্ত্রাসীবাহিনী সহ তার গডফাদার কে নিয়ে নিউজ লেখা শুরু করবেন, তার মূখোশ খুলে দিবেন।

আপনারা কি ঐ সান্ত্রাসীদের গডফাদার এর ক্ষমতার কাছে জিম্মি, নাকি তার অবৈধ টাকা আছে পরাজিত? আইনের প্রতি আস্থা ও সম্মান রেখে বলতে চাই আমরা ভাই বিনা অপরাধে জীবন দিয়েছে, আমরা রক্তের বদলা ফাঁসি নিবো।

আসুন, আমরা স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সকল প্রকার অন্যায় ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেই এবং একে অন্যের পাশে দাঁড়াই আর আগামী প্রজন্মকে একটা সুন্দর ও বসবাস উপযোগী পৃথিবী উপহার দিয়ে যাবার চেষ্টা করি।

এ বিষয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে, কুড়িগ্রাম জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক “মোঃ মমিনুর রহমান মুমিন” বলেন, সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই, তারা যতই ক্ষমতাধর ব্যাক্তি হোক না কেনো, সুষ্ঠ তদন্ত করে তাদের প্রকৃত গর্ডফাদার ও ইন্ধন দাতা কে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

কুড়িগ্রাম সদর থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) গোলাম মর্তুজা বলেন, বাবলু হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে এজাহার নামীয় এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা চলছে।

আরও খবর: