জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২৪ মে ২০২৩ , ৩:৫৮ অপরাহ্ণ
সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১১ জন প্রার্থী। সিসিকের বর্তমান মেয়র বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে নির্বাচন বয়কট করলেও বেশ জোরেশোরে আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের মাহমুদুল হাসান। এদের মধ্যে স্বশিক্ষিত নজরুলের সম্পদ বেশি থাকলেও শিক্ষায় এগিয়ে রয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান ও মাহমুদুল। নির্বাচন কমিশনের কাছে তাদের জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে তাদের সম্পর্কে নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে দলীয় প্রতীকের প্রার্থী রয়েছেন চার জন। তারা হলেন- মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), নজরুল ইসলাম (লাঙ্গল), হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি)।
মনোনয়নপত্র দাখিল করা অন্য স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীরা হলেন- মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
রিটার্নিং কর্মকর্তার স্টাফ অফিসার সৈয়দ কামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, ২৫ মে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হলফনামা যাচাই-বাছাই করা হবে। এর পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ অনুসরণ করা হবে।
নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত হলফনামায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানের শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ অনার্স। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দেখিয়েছিন- নিজ নামে নগদ টাকার পরিমাণ ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। স্ত্রীর নামে দেখিয়েছেন ৪৭ ভরি স্বর্ণ।
নিজ নামে আসবাবপত্র দেখিয়েছেন ২টি টেলিভিশন, ১টি ফ্রিজ ও ২টি এসি। আসবাবপত্রের মধ্যে আছে ২ সেট সোফা, ৪টি খাট, ১টি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও ২টি আলমারি
স্থাবর সস্পদের মধ্যে কৃষি জমি আছে নিজ নামে ৩ বিঘা, অকৃষি জমি ২৩ শতক, দালান ১টি। বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ১টি। তবে এগুলোর মূল্য উল্লেখ করা হয়নি।
বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন কৃষিখাতে ১ লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৪২ টাকা, বাড়ি,অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় ৪৭ হাজার ৫৪২ টাকা।
অপরদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম স্বশিক্ষিত হলেও পেশায় ব্যবসায়ী এবং তিনি খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফিজা অ্যান্ড কোংসহ ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। কৃষিখাতে তার কোনো উপার্জন নেই। তবে ব্যবসা খাতে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৬৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৯ টাকা।
নজরুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদ আছে ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৩ টাকার। তার স্ত্রীর নামে আছে ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নজরুল ইসলামের আছে নগদ ৫২ লাখ ৮৯ হাজার ১১০ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১১ লাখ ১২ হাজার টাকা। নিজ নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৯ টাকা। বিএমডব্লিউ, টয়োটা প্রাডো গাড়ি আছে একটি করে। এর বাইরেও চারটি কার্গো ভ্যান, আটটি কাভার্ডভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল আছে। স্বর্ণালঙ্কার নিজ নামে ৩ লাখ ২০ হাজার এবং স্ত্রীর নামে ৩ লাখ টাকার দেখিয়েছেন।
নজরুল ইসলামের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি দালান ও টিনশেড বাড়ি আছে। এগুলোর মূল্য উল্লেখ নেই। তার ৫ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকার ঋণ আছে। এর মধ্যে আইডিএলসি সিলেট শাখায় ঋণ ১ কোটি ১৩ লাখ ৬০ হাজার ৫২৩ টাকা। ফিজা অ্যান্ড কোং (প্রা.) লিমিটেড থেকে ঋণ দেখিয়েছেন ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৪৭৪ টাকা।
নজরুল ইসলামের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি দালান ও টিনশেড বাড়ি আছে। তিনি ব্যাংক ঋণ দেখিয়েছেন ৫ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকা।
তার বিরুদ্ধে সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে। তবে মামলাটি তদন্তাধীন দেখিয়েছেন তিনি। অতীতে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা থাকলেও সবগুলোতে খালাস পেয়েছেন।
ইসলামী আন্দোলন মনোনীত মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন স্নাতক (এলএলবি)। পেশায় ব্যবসায়ী এই প্রার্থী ২০১১ সালের একটি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তার বাৎসরিক ব্যবসা ও দোকান ভাড়া থেকে আয় দেখিয়েছেন ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ১টি মোটরসাইকেল ও ১ কম্পিউটার ও আসবাবপত্রের মূল্য দেখিয়েছেন ২ লাখ ১০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে দেখিয়েছেন ২০ ভরি স্বর্ণ। স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানায় বাড়ি ও দালানের ৬ ভাগের ১ অংশের মালিক তিনি। তবে ব্যাংকে কোনো দায়দেনা নেই মাহমুদুলের।
সূত্র- ঢাকা পোষ্ট