দেশজুড়ে

ভেদরগঞ্জে খালে একাধিক বাধ, পানি প্রবাহ অব্যাহত রাখার দাবিতে মানববন্ধন

  জাগোকন্ঠ ৪ জুন ২০২৩ , ৭:০২ অপরাহ্ণ

মাহাবুব তালুকদার:

শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ বাজারের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালে একাধিক বাধ, পানি প্রবাহ অব্যাহত রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় কৃষক ও জনসাধারন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার কৃষকরা।

রোববার (০৪ জুন) দুপুরে উপজেলা চত্বর এলাকা থেকে একটি বিশাল মিছিল শুরু করে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ভেদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এসে একত্রিত হন কৃষক সহ এলাকার সাধারন জনগন। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন এঁর বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ভেদরগঞ্জ বাজারের ঐতিহ্যেবাহী পুরানো একটি খাল প্রবাহিত হয়ে নড়িয়া উপজেলার চেয়ারম্যান বাজার, ডিংগামানিক, চামটা,ফতেজঙ্গপুর, বিঝারী, ভোজেস্বর, ধামারন এলাকার হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা হয়। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরাকারি ভাবে বরাদ্দের ওয়াক ওয়ে নির্মান করতে গিয়ে খালে বাধ দিয়ে কৃষকদের বোরো ধান, ইরি ধান সহ নানা রকম ফসল পানি নিষ্কাশনের কারনে নষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা অনেক ক্ষতি গ্রস্ত হচ্ছে। এবং খালের প্রসস্থ কমিয়ে এমন সৌন্দর্যের কোন দরকার নেই। খাল দখলদারীদের বিশেষ সুযোগ করে দিতেই এই ওয়াকওয়ে নির্মান করা হচ্ছে। পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন বন্ধ হওয়ায় পানি পচে দুর্গন্ধে পারিবেশ দুষন হয়ে মশা মাছি বেড়ে গিয়ে ছোট বড় সকলেরই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

উপস্থিত বক্তারা আরও বলেন বাধ হওয়ার পূর্বে স্থানীয় জনসাধারণ এ খালের পানিতে গোসল সহ রান্নাবান্নার কাজেও ব্যাবহার করতো, এখন এ পানি ব্যাবহার তো দূরের কথা দুর্গন্ধে এঁর ধারে কাছেও যেতে পারছে না।

ভেদেরগঞ্জ পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ হাওলাদার বলেন, খাল বাচাও পরিবেশ বাঁচাও এই স্লোগান দিয়ে বলেন, কই আমাদের এই ভেদরগঞ্জের খাল ঐতিহ্যবাহী পুরনো একটি খাল এই খালটি প্রশস্তের অনেক বড় এবং খালটি বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে একটি উন্নয়ন প্রকল্প ওয়াক নির্মাণ হচ্ছে কিন্তু এই খালের নির্মাণের কাজের জন্য খাল বাদ দিয়ে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে কৃষকদের ফসল ক্ষতি হচ্ছে। হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে এবং পরিবেশ দূষণ হচ্ছে গন্ধে অনেক শিশুদের রোগ হচ্ছে। এই খালটি নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ফসলি জমিতে ও পানি যায়। তাই এই খালের বাধ শীঘ্রই খুলে দেওয়া উচিত এবং এই খালের দুই পাশে খাল পরিমাপ করে তারপরে এই উন্নয়ন প্রকল্প করা উচিত। যদি দ্রুততার সাথে এই খালের বাধটি উঠিয়ে নেয়া না হয় তাহলে আমরা ভুক্তভোগী জনসাধারণকে সাথে নিয়ে আরো কঠোরভাবে পদক্ষেপ ও আন্দোলনে নামবো।

মানববন্ধনের বিষয় ভেদরগঞ্জ থানা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক রফিক মোল্লা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমরা আকুল আবেদন জানাই যে ভেদেরগঞ্জের এই খালটি প্রসস্ত ঠিক রেখে উন্নয়ন প্রকল্প করার জন্য আকুল আবেদন জানাই। আমরা আজকে এখানে মানববন্ধনে নেমেছি খালের বাধ কেটে পানি প্রবাহ করে দেয়ার জন্য ও খাল পরিমাপ করে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প নির্মান করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন এঁর কাছে স্বারকলিপি জমা দিয়েছি। সরকারি প্রকল্পের ঠিকাদার উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ূন মোল্যাকেও বিষয়টি একাধিক বার জানানো হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্য খালের বাধ ছেড়ে না দিলে আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে নামবো।

বক্তব্যে নড়িয়া উপজেলার চামটা ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি আব্দুল শুক্কুর খান বলেন, শুধু ভেদরগঞ্জ নয় এই খালটি দিয়ে আমাদের নড়িয়া উপজেলারও প্রায় এক হাজার কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। তারা প্রতিবছরই বোরো ধান ইরি ধান করে এবং এই বোরো ধান করতে গেলে কিছু সময় পানি প্রয়োজন হয় সেই পানি আজকে এক বছর যাবত বন্ধ রয়েছে। তাই আমাদের ফসল ফলানো কষ্ট হচ্ছে এবং ফসল ফলানো যাচ্ছে না আমরা দ্রুততার সাথে খালটির বাধ খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায় সময় বলেন কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে এই বিষয়টি সব সময় আমাদেরকে বলে থাকেন এবং আমাদের বিষয় নজর দিয়ে থাকেন আমাদের উপর প্রধানমন্ত্রীর দোয়া ও ভালোবাসা থাকবে।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের ঠিকাদার উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, তারা মানববন্ধন করতাছে করুক আমার কাজ আমি করবো দেখি কি হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মানববন্ধনকারীরা আমার কাছে এসে একটি স্মারক দিয়ে গেছেন। সরকারি প্রকল্পের এই কাজটি করতে গিয়ে খালে বাদ দেওয়া প্রয়োজন ছিলো তাই ঠিকাদার সেইখানে বাদ দিয়েছে।ঠিকাদারের কাজটি করতে একটু সময় লাগার কারণে খালেবাদটি খুলে দেয় নি আমি জানতে পারি। তবে আগামী এক সপ্তাহের ভিতরে এই খালের বাধ খুলে দেওয়া হবে বলে আমি আশ্বস্ত করলাম।

আরও খবর: