আইন-আদালত

গোসাইরহাটে হত্যা মামলার অভিযোগে আড়াইমাস পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন

  জাগোকন্ঠ ১৪ নভেম্বর ২০২২ , ২:৫০ অপরাহ্ণ

  • শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে
এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। তাই এই ঘটনায় আদালতে মামলা হলে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন (২০) নামের এক অন্তসও্বা গৃহবধূর লাশ ২ মাস ১৭ দিন পর ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ রোববার (১৪ নভেম্বর ) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে গোসাইরহাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাস গুপ্ত ও গোসাইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম সিকদারের উপস্থিতিতে গোসাইরহাট ইউনিয়নের কাশিখন্ড গ্রামের নিহতের বাবার বাড়ির কবর থেকে পুলিশ লাশ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহত সাবিনা ইয়াসমিন (২০) শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের কাশিখন্ড গ্রামের কাঞ্চন গাইনের মেয়ে। আদালতে মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ মার্চ একই গ্রামের মৃত বাবুল রাড়ির ছেলে শাহাদাত হোসেন রাজিবের (২৮) স্ত্রী সাবিনা তিনমাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক চেয়ে প্রায়ই সাবিনাকে মারধর করা হতো।

একই কারণে ২৬ আগস্ট বিকেল ৫টার দিকে রাজিব তাঁর মা রোকেয়া বেগম (৬০), বোন কাকলি বেগম (১৯), ভাই নাজমুল হোসেন রাড়ী (৩৩) ও তার প্রতিবেশী আত্মীয় পান্টু আহমদ মাঝিকে (৪৫) নিয়ে স্ত্রী সাবিনাকে মারধর করে। তারা সাবিনাকে রড দিয়ে পিটানোসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি, লাথি মারে এবং শ্বাসরোধ করে। এমতাবস্থায় তাকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু বলে ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় সাবিনার বাবা কাঞ্চন গাইন তাঁর মেয়েকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে ১ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে নালিশ দাখিল করেন। ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ স্বপন কুমার সরকার বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার হিসেবে গ্রহন করে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় সাবিনার স্বামী রাজিব, শাশুরি রোকেয়া, ননদ কাকলি, ভাসুর নাজমুল ও প্রতিবেশী পান্টুকে আসামি করা হয়।

তিনি বলেন, আসামীরা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার ফাঁসি দাবি করছি।

নিহতের মা মোরশেদা বেগম বলেন বিয়ের পর থেকেই টাকা আর স্বর্ণের গহনার জন্য আমার মেয়েকে তার স্বামী ননদ শশুরি মারধর করতো তাই সে অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করে পেটের গর্ভে বাচ্চার দিকে তাকিয়ে সব ধৈর্য ধরে থাকতো। আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্ম হত্যার নাটক সাজায় তার শশুর বাড়ির লোকজন।

গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম সিকদার জানান মামলার বাদী বিজ্ঞ আদালতে অনুমতি চেয়েছেন যে ওনার মেয়ের যে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট হয়েছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন। আবেদনে করার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পুনরায় লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এসিল্যান্ড মহোদয় দায়িত্বে এবং আমরা লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করেছি। পুনরায় পোষ্ট মর্টেমের জন্য জেলা সদরে পাঠানো হচ্ছে।

গোসাইরহাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন দাস গুপ্ত বলেন বিজ্ঞ আদাল‌তের এক‌টি আদেশ অনুসা‌রে আমরা কবর থে‌কে মর‌দেহ উত্তোলন ক‌রে‌ছি। স্থানীয় জনগণ ও স্বজন‌দের উপস্তিতিতে লাশ সনাক্ত করা হ‌য়ে‌ছে। প্রাথমিক তথ্য আমরা লিপিবদ্ধ করেছি। পোস্ট ম‌র্টে‌মের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতা‌ল ম‌র্গে পা‌ঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে।

আরও খবর: