দেশজুড়ে

নামজারি করতে ১০ হাজার দিয়েও মাসের পর মাস ঘুরছেন এক বৃদ্ধা

  জাগোকন্ঠ ২০ অক্টোবর ২০২৩ , ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

শাহাদাত হোসেন (হিরু) ভেদরগঞ্জ প্রতিনিধি:

সরকারিভাবে জমির মালিকদের নামজারি করতে ১ হাজার ১৫০ টাকা ফি নির্ধারণ থাকলেও শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের সখিপুর “খ” ইউনিয়ন ভুমি অফিসে একটি নামজারি নেয়া হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। দীর্ঘদিন যাবত এই ভূমি অফিস অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

জমি খারিজসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে দিনের পর দিন হয়রানির সাথে গুনতে হচ্ছে ঘুষের টাকা। এই অফিসে মাহাবুব রহমান যোগদানের পর থেকেই রামরাজত্ব চলছে এ অফিসে। জমি খারিজ ও প্রয়োজনীয় কাগজ নিতে দিনের পর দিন একজন নাগরিকের হতে হচ্ছে ভোগান্তি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে জমি খারিজ পাওয়ার বিধান থাকলেও এখানে ৫-৬ মাস ধরে নানা অজুহাতে আটকে রাখা হচ্ছে। এবং ঘুষের টাকা সব লেনদেন হয় অফিস সহায়ক স্বপন ঘোষের হাত দিয়ে। তাই ধরা ছোয়ার বাহরে ইউনিয়ন সহকারী ভুমি কর্মকর্তা।

এমনই এক ভুক্তভোগী সোবাহান প্রদানিয়া, তিনি গত এপ্রিল মাসে চরসেনসাস ও তারাবুনিয়া মৌজার সাতটি দলিলে ১৪৫ শতক জমি খারিজ করতে গিয়েছিলেন সখিপুর “খ” ইউনিয়ন ভুমি অফিসে।জমির সকল দলিল কাগজপত্র ঠিক থাকা শর্তেও অফিস সহায়ক স্বপন ঘোষ সেই জমি খারিজ করতে তাকে ৪ দিন ঘুরিয়ে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন।তিনি উপায় আপায় না পেয়ে ১০ হাজার টাকা গুছিয়ে দেন স্বপন ঘোষের হাতে। সাত মাস হয়ে গেলেও এখনো সেই নামজারি করে দিচ্ছেন না সেই অভিযোগ তার। ৪০ হাজার টাকার বাকি ৩০ হাজার টাকা না দিতে পারায় এখন পর্যন্ত তার জমি খারিজ করতে পারেননি তিনি। দিনের পর দিন তহসিল অফিসের দরজায় ঘুরতে ঘুরতে তার জুতা ক্ষয় হচ্ছে।

চরসেনসাসের বাসিন্দা কালা বেপারীর ভাই কামাল হোসেন ভুক্তভোগী জানান, তার ছোট ভাই কালা বেপারীর একটি জমির নামজারির সংশোধনের জন্য কোর্ড থেকে রায় দিয়েছে। সেই রায়ের কপি নিয়ে আসলে আমি নতুন করে নামজারি করানোর জন্য আবেদন করতে চাই। কিন্তু ও আমার থেকে ৫০ হাজার টাকা চাওয়ার পরে আমি থমকে যাই। পরে আমি ৩০ হাজার টাকা অফার করেছিলাম তারপরও তিনি নামজারিটা করছেন না আমার এই নামজারিটা করাতে পারছিনা আমি অনেক হয়রানি হচ্ছি।

এ বিষয় অফিস সহায়ক স্বপন ঘোষ বলেন, আমি নামজারি করতে কোন টাকা পয়সা কারো থেকে নেই নি। এখন সব অনলাইনেই করা যায়।

এ ব্যাপারে সখিপুর (খ) ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মাহাবুব রহমান বলেন, নামজারি অথবা জমির খাজনা দিতে অতিরিক্ত কোন টাকা লাগে না। আর টাকা লাগলেও সেটা অনলাইনে গ্রাহকরা করতে পারে। কোন টাকা পয়সা চাইনি কারো কাছথেকে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ইমামুল হাফিজ নাদিম বলেন, স্বপনের বিরুদ্ধে আমার কাছে আরো অভিযোগ এসেছে। আমরা দুইটি অভিযোগ তদন্ত পূর্বক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নিব।আর আমি এ বিষয় আমার উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানাবো।

আরও খবর: