দেশজুড়ে

খাল-বিলে নেই পানি, পাট নিয়ে বিপাকে রাজবাড়ীর চাষিরা

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৯ জুলাই ২০২৩ , ৩:৩২ পূর্বাহ্ণ

পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন রাজবাড়ীর পাট চাষিরা। চলতি মৌসুমে পাট কাটা শুরু হয়েছে। তবে জেলার অধিকাংশ খাল, বিল ও জলাশয়ে তেমন পানি নেই। যে পরিমাণ পানি রয়েছে, তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ঠ নয়। অনেকটা বাধ্য হয়ে পাট চাষিরা পাট কেটে খেত থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে দূরের জলাশয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলার চলতি মৌসুমে ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত পাট চাষ হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।

তবে সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর, শহীদ ওহাব পুর, বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর, জঙ্গল ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা খেত থেকে পাট কাটা শুরু করেছেন। পানির অভাবে জাগ দিতে না পারায় পাট কেটে খেতেই গাদি দিয়ে রাখছেন। ফলে রোদে পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার অনেকে ঘোড়ার গাড়ি বা নসিমনে করে পাট দুই/তিন কিলোমিটার দূরে নদীতে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে।

dhakapost

বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের পাটচাষি সুবাস বিশ্বাস বলেন, আমি এ বছর ৫বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পানির অপেক্ষায় থেকে পাট কাটা শুরু করেছি। এক বিঘা জমির পাট কেটে বাড়ির পুকুরে  জাগ দিয়েছি। আমার আর জাগ দেওয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছি। আমার পাট রোদে শুকিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। আমি বিপদের মধ্যে রয়েছি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের কৃষক তারু শেখ বলেন, তিন বছর ধরে রাজবাড়ীর পাট চাষিরা বিপাকের মধ্যে রয়েছে। আমি পাট কাটা শুরু করেছি। আমার ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। জমি থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে পাট হড়াই নদীতে নিয়ে যাচ্ছি। আমার উৎপাদন খরচ ২৫ শতাংশ (এক পাখি) জমিতে প্রায় ১৩শ টাকার মতো বেড়ে যাচ্ছে।

শহীদওহাব পুর ইউনিয়নের আরেক কৃষক কাশেম প্রামাণিক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে। আগে সঠিক সময়ে বৃষ্টি হতো। পাট কেটে সরাসরি বিলের পানিতে জাগ দেওয়া যেত। গত তিন বছর পাট জাগ দেওয়া নিয়ে খুব ঝামেলা হচ্ছে। পাটচাষের জন্য রেমন রেডিং পদ্ধতি কোন কাজে আসেনি।

বালিয়াকান্দির জঙ্গল ইউনিয়নের পাট চাষি হারেজ শেখ বলেন, বর্তমানে কৃষকেরা অন্যের পুকুর লিজ নিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন। খরচ বেড়ে যাচ্ছে অনেক টাকা। গত বছরের থেকে এই বছর মণ পতি পাটের দাম ৫০০ থেকে ৬০০টাকা কম। বর্তমানে ২ হাজার ৬০০ টাকা প্রতিমণ পাট বিক্রি হচ্ছে। পাট চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আবুল কালম আদাজ বলেন, রেমন রেডিং পদ্ধতি পাট চাষিদের জন্য উপযোগী নয়। এই পদ্ধতি কৃষকেরা ব্যবহার করেন না। বর্তমানে পানির জন্য রাজবাড়ীর পাট চাষিরা বিপাকের মধ্যে রয়েছেন। আমরা পরামর্শ দিচ্ছি নদীতে পাট জাগ দেওয়ার জন্য।

আরও খবর: