দেশজুড়ে

জমি কিনে বিপাকে কানাডা প্রবাসী মহিউদ্দিন

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২৮ মে ২০২৩ , ৫:৩৩ অপরাহ্ণ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে জমি কিনেছিলেন কানাডা প্রবাসী মহিউদ্দীন। কিন্তু এই জমি কেনার পরেই বাঁধে যত বিপত্তি। শুরু হয় তাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র। করা হচ্ছে হয়রানি। প্রবাসী মহিউদ্দীনের বাড়ী ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায়। তার অভিযোগ, সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের নায়েব এসিল্যান্ড ও ইউএনও অফিসের অসাধু কর্মকর্তা সাথে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ পরিকল্পিতভাবে তাকে হয়রানি ও নানা ষড়যন্ত্র করছেন।
জানা যায়, শৈলকূপার কবিরপুর এলাকার নজরুল ইসলামের কাছ নতুন ব্রিজ সংলগ্ন ৪৩৫/৫০৬ আর.এস ৫০৫ নং খতিয়ানভুক্ত ১৪১৪ দাগের ৬০ শতকের মধ্যে ৪৭ শতক, মধ্যে ৩৫ শতক মধ্যে ২৯.৫ শতক জমি ১৪২৫/১৬ ,৫৯০ নং রেজিস্ট্রিকৃত খোশ কবলা দলিলের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারী ক্রয় করেন।  সে অনুযায়ী ২৯.৫০ শতক জমি ১৩/ওঢ-১/২০১৮-১৯ নং নামজারী মামলায় নিজ নামে ৯৬৫ নং খতিয়ান খুলে সরকারী কর প্রদান করেছেন। জমির সীমানা ঠিক করে কলাগাছ লাগিয়েছেন ও বেড়া দিয়ে ঘিরে ভোগ-দখল করছেন। কিন্তু এসবের পরই শুরু হয় নানা সমস্যা।
কানাডা প্রবাসী মহিউদ্দীন জানান, কবিরপুরের স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ যারা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের দালাল হিসেবে কাজ করে এবং তহশিল অফিস, ভূমি অফিস ও ইউএনও অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে প্রায় ৩ বছর আগে তাঁর কাছে প্রথমে এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং বলতে থাকে চাঁদা না দিলে জমিতে সে কোন কাজ করতে দিবে না। এরপর এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলাকালীন সময়েই তারা এসিল্যান্ড, ইউএনও এবং তাদের অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আরও পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করে। এভাবে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অংকের টাকা নিলেও তাদের দাবী আজও শেষ হয়নি। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই এসিল্যান্ড বা ইউএনওকে নিয়ে এসে জমির বেড়া ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে যায়। তাছাড়া এসিল্যান্ড ও নায়েব অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী টাকার জন্য প্রায়ই হুমকি দিতে থাকে। তহশিল অফিসের নায়েব শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা না পেয়ে গত ২০২২ সালের ১৬ এপ্রিল সকাল ১১ টায় তার লোকজন নিয়ে এসে জমিতে কাজ চলা অবস্থায় হামলা করে জমির বেড়া ভেঙে দিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়ে যায়।
মহিউদ্দিন আরও জানান, এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তার মালিকানা জমিতেই আমাকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দাবী করে আমার নামে থানায় একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়েরের আবেদন জমা দেয়। শৈলকুপা থানার পরে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সরেজমিনে তদন্ত করেন এবং জমির কাগজপত্র পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে আমাকে নিশ্চিত করেন এ মামলার কোন গ্রাউন্ড নেই, কেননা তাদের আবেদনের স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র তাদের নাই, তাই তাদের এ মামলা আমরা নিব না।
মহিউদ্দীনের দায়েরকৃত ইনজাংকশন মামলায় আদালত থেকে প্রথমে সরকার পক্ষকে শোকজ করে, কিন্তু সরকার পক্ষ শোকজের কোন জবাব দেয়নি। অতঃপর হেয়ারিং-এ হাজিরার জন্য বেশ কয়েকবার তারিখ থাকলেও সরকার পক্ষের উকিল প্রথমদিকে কয়েকবার হাজির হয়ে কোন যুক্তিযুক্ত বা তাদের দাবির পক্ষে কোন ডকুমেন্ট হাজির করতে না পেরে পরবর্তীতে আর কোর্টে হাজির হয়নি। এমতাবস্থায় আদালতকর্তৃক তার পক্ষে মামলার রায় হয় এবং সরকারের উপর পারমানেন্ট ইনজাংকশন জারি হয়। কিন্তু এরপরেও ভূমি অফিস, নায়েব অফিস ও ইউএনও অফিসের লোকজন ও সন্ত্রাসীরা মিলে আমার জমিতে থাকা গাছ, সিমেন্টের খুটি ও কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে দিয়ে গেছে ও জমির ঘেরের কাটাতার নিয়ে গেছে। জমির কলাগাছ কেটে দিয়েছে। জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে গেছে। এভাবে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করেছে।
এমতাবস্থায় দায়ীদের শাস্তি ও হয়রানি থেকে মুক্তির জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কানাডা প্রবাসী মহীউদ্দীন।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুরদাস মন্ডল কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে শৈলকুপার সহকারী কমিশনার(ভূমি) বনি আমিন জানান, মহিউদ্দিন সাহেবের জমিটা সম্পূর্ণ খাস খতিয়ান ভুক্ত নদীর জমি। সেখানে এক সময় ভূমিহীনরা বসবাস করতো এবং তাদের কাছ থেকে জমিটা ক্রয় করেন প্রবাসী ওই ব্যক্তি। এটা নিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা আদালতে মামলা করেছে। ওই প্রবাসীও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। আশা করছি বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ঘটনাটির সুরাহা হবে।
এ বিষয়ে জানতে শৈলকুপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া আক্তার চৌধুরীকে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরও খবর: