দেশজুড়ে

ঋণ করে জ্বীনের বাদশাকে ১২ লাখ টাকা দিলেন আবুল!

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২৬ জুন ২০২৩ , ৩:১৯ পূর্বাহ্ণ

যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আবুল হোসেন (৬৫)। ব্যবসায়ীক সুবাদে বিভিন্ন পাওনাদারের কাছে চার লাখ টাকা পাওনা হয়ে যায়। পাওনা টাকা পরিশোধ করার নামে একের পর এক কালক্ষেপণ করতে থাকে পাওনাদাররা। হঠাৎ ছয় মাস আগে টেলিভিশনের পর্দায় দেখতে পান ‘জ্বীনের মাধ্যমে পাওনা টাকা আদায় করা সম্ভব’ এমন একটি বিজ্ঞাপন। 

টেলিভিশনের পর্দার মোবাইল নম্বরে কল করলে অপর পাশ থেকে কথিত জ্বীনের বদশা জানায় তিনি জ্বীনের মাধ্যমে আবুল হোসেনের সকল পাওনা টাকা আদায় করে দেবেন। একই সঙ্গে আরও ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখায় কথিত প্রতারক চক্রের ওই জ্বীনের বাদশা।

আবুল হোসেনকে বলা হয়, তার বাড়ির রাস্তায় ২১টি কলসে ওই টাকা লুকানো আছে, যা জ্বীন তাকে পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করবে। এমন প্রলোভনে পড়ে জ্বীনের বাদশার ফাঁদে পা দেন আবুল হোসেন। তাকে এটাও বলা হয়, এই বিষয়টি কাউকে জানালে তিনি আর টাকা উদ্ধার করতে পারবেন না। কেউ জানতে পারলে তার মালয়েশিয়া প্রবাসী ছেলে মারা যাবে। আর ওই ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকাও পাওয়া যাবে না। এই ভয়ে ‘জ্বীনের বাদশার’ কথামতো কাজ করতে থাকেন তিনি।

কয়েকদিন কথা বলার পর জ্বীনের বাদশা তাকে প্রস্তাব দেয় ১৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা পেতে হলে তাকে ১২ লাখ টাকা বিকাশে পাঠাতে হবে। এমন সময় আবুল হোসেন সরল বিশ্বাসে লেবুতলা বাজারের দুটি বিকাশ নম্বর থেকে কয়েক দফায় ১২ লাখ টাকা পাঠান। পরবর্তীতে তিনি জ্বীনের বাদশার ওই দুটি ফোন নম্বর বন্ধ পান তিনি।

ভুক্তভোগী আবুল হোসেন বলেন, আমি যখন ওই কথিত জ্বীনের বাদশার সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর থেকে সে আমাকে বিভিন্ন কথার ছলে বলে আমার মগজ ধোলাই করে। একে একে তার কথামতো আমি ধার-দেনা, সুধে টাকা নিয়ে, জমি বিক্রি করে, ব্যাংক ঋণ নিয়ে ১২ লাখ টাকা পাঠিয়েছি। আমি সরল সোজা মানুষ, টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেখে এ প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। আমি মামলা করেছি, আমার এ টাকা উদ্ধার না হলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

আবুল হোসেন আরও বলেন, আমি মানুষের কাছ থেকে ধার দেনা করে টাকা নিয়েছি। এখন দেনাদাররা আমার বাড়িতে এসে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমার নামে মামলা করতে যাচ্ছে। আমার ঘরে চাল কেনার পয়সাও নাই এই মুহূর্তে। প্রশাসনের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আমার টাকাগুলো যেন উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পেটের দায়ে আমার অসুস্থ স্ত্রী বাসাবাড়িতে কাজ করছে। ছেলে বিদেশে থাকে তবে এখনও বাড়িতে খরচ পাঠাতে পারে না।

এ ব্যাপারে যশোর সিআইডি পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাজী বাবুল  বলেন, ভুক্তভোগী আবুল হোসেন মামলা করেছেন। আমাদের সিআইডি পুলিশেও অভিযোগ দিয়েছেন। আমাদের কাছে মামলার কপি পৌঁছালেই আমরা প্রতারক চক্রকে আটক করবো।

আরও খবর: