দেশজুড়ে

মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন ভাতা তুলছে মাদ্রাসা প্রধান

  জাগোকন্ঠ ১০ নভেম্বর ২০২৩ , ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ

দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি:

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের এ.রব সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ইউনুস আলী গত ছয় মাস ধরে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত । অথচ বেতন তোলে নিয়োমিত । এমন অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী সহ ব্যবস্থাপা কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যগণ ।
জানা যায়, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ মো. ইউনুস আলী গত ছয় মাস ধরে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছে । ইতিমধ্যে জেলা শহরের অগ্রনী ব্যাংক থেকে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা টিউশন ফি উত্তোলন সহ বিজ্ঞান অনুষদের অনুদান ১ লক্ষ টাকা, মাদ্রাসায় দানকৃত জমির বাৎসরিক ভাড়া ৭ লক্ষ টাকা গায়েব করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে । এছাড়াও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বিতরণে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে নিয়মিত ব্যবসা করে আসছে বাড়িতে বসেই ।
২০০১ সালে ইউনুস আলী এ.রব সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদানের পর থেকে মাঝে মধ্যেই তার অনিয়মেরর তথ্য ফাঁস হয় । যা চাঞ্চল্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে পুরো দেওয়ানগঞ্জে । মাদ্রাসার সুনাম ও শিক্ষার মান রক্ষায় ২০২২ সালের ১৫ জানুয়ারি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, এলাকাবাসী ও ব্যাবস্থাপনা কমিটির সদস্যগণ ইউনুস আলীর অপসারণ দাবি করে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে । জনসমুক্ষে কমিটির লোকজন জানায়, মাদ্রাসার ২৮ একর জমির মধ্যে ১০ একর জমি অবৈধ ভাবে বিক্রি করেছে সুপার । মাদ্রাসার বিগত ১০ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না ।
মানববন্ধনের পর থেকে ইউনুস আরো বেশি অনিয়মের সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসীর সমালোচনা। পুরাতন কমিটি ভেঙ্গে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নিয়ে নতুন করে মনগড়া ব্যবস্থাপনা কমিটি করেছে । এখন সভাপতির প্রভাব খাটিয়ে মাদ্রাসায় মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে বেতন তোলে নিয়মিত ।
তথ্য অনুসন্ধানের জন্য পরপর বেশ কয়েকদিন মাদ্রাসায় সরেজমিন উপস্থিত হয়ে অধ্যক্ষ ইউনুস আলীকে পাওয়া যায়নি । এসময় জিজ্ঞাসাবাদে সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, মো. শফিক উল্লাহ, দিদার হোসেন, আসাদুজ্জামান বলে, অধ্যক্ষ কেনো অনুপস্থিত তার কোন নোটিশ আমাদের কাছে নেই । যতটুকু জানি, কমিটি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে দ্বন্দ্ব তাই তিনি মাদ্রাসায় আসেন না । আমরা তার অধিনস্ত চাকরি করি । তার ব্যাপারে এর বেশি কথা বলতে পারবো না । আরবি প্রভাষক ইউনুস আলী হক কথা বলার কারনে দুই বছর থেকে তার বেতন বন্ধ আছে । আমরা চাইনা আমাদের বেতন বন্ধ হোক ।
ব্যবস্থাপনা কমিটির বর্তমান সভাপতি মো. আব্দুর রহিম মিঠ অধ্যক্ষের অনিয়মের বিষয় স্বীকার করে বলেন , তার নিরাপত্তার কথা ভেবে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফা আখতার বলেন, আমি তার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র নিয়মিত আপডেট পাচ্ছি । অনিয়ম দূর্নীতির তথ্য জানতাম না । শুধু জানতাম তার প্রতিষ্ঠানে একটু সমস্যা হয়েছিলো যা সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা সমাধান করে দিয়েছে । অনিয়মের বিষয়টি জানলাম ব্যবস্থা নিবো ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স প্রতিবেদককে বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো ।

আরও খবর: