জাতীয়

তুলার ফিউমিগেশন বাতিলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল যুক্তরাষ্ট্র

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২২ মে ২০২৩ , ৫:৪৮ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা বাংলাদেশের বন্দরে ফিউমিগেশন বা বিষবাষ্পীকরণের মাধ্যমে পতঙ্গমুক্ত করার প্রক্রিয়া ছাড়া ছাড় করা যাবে। এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অর্থ সাশ্রয় হবে ও এ প্রক্রিয়া জন্য লাগা পাঁচদিন আর অপেক্ষা করতে হবে না।

সোমবার (২২ মে) ঢাকার মার্কিন দূতাবাস বাংলাদেশে আসা তুলার ফিউমিগেশন বাতিলকে স্বাগত জানিয়ে এক বার্তায় এসব তথ্য জানিয়েছে।

মার্কিন দূতাবাস জানায়, গত ১৬ মে থেকে কার্যকর হওয়া আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা বাংলাদেশের বন্দরে ফিউমিগেশন বা বিষবাষ্পীকরণের মাধ্যমে পতঙ্গমুক্ত করার প্রক্রিয়া ছাড়াই ছাড় করা যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের শত শত কোটি টাকা ব্যয়-সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি পাঁচ দিন অপেক্ষার অবসান হবে।

দূতাবাস বলছে, আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তুলা ফিউমিগেশন বা বিষবাষ্পীকরণের মাধ্যমে পতঙ্গমুক্ত করার প্রক্রিয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় একদিকে আমদানিকারকের কাছে তুলা পৌঁছাতে দেরি হতো, অন্যদিকে বাংলাদেশি আমদানিকারকদের প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা এ বাবদ খরচ করতে হতো।

আমেরিকা থেকে আমদানি করা উচ্চমানের ও টেকসই তুলার ফিউমিগেশন বা বিষবাষ্পীকরণের মাধ্যমে পতঙ্গমুক্ত করার প্রক্রিয়ার প্রথা বাতিল করায় এখন আমেরিকান তুলা সরাসরি ও সহজেই বাংলাদেশি আমদানিকারকদের মাধ্যমে তৈরি পোশাক শিল্পের সাপ্লাই চেইন বা সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রবেশ করতে পারবে। ফলে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক খাতের উল্লেখযোগ্য সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

দূতাবাসের বার্তায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার ২০২২ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি কারিগরি প্রতিনিধি দলের যুক্তরাষ্ট্র সফরের ধারাবাহিকতায় এ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। প্রতিনিধি দলটি যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে সরেজমিনে যুক্তরাষ্ট্রের তুলা উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিদর্শন করেছে এবং তাদের কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কৌশল যাচাই করে দেখেছে। এসময় তারা তুলা প্রক্রিয়াকরণে যে কৌশলগুলো অনুসরণ করে জিনিং বা তুলা থেকে বীজ ও ময়লা পরিষ্কার করা, লিন্ট ক্লিনিং বা পাতা, ঘাস বা অন্যান্য উপাদান সরিয়ে ফেলা, তুলার বেল তৈরির সময় কঠোরভাবে চাপানো দেখে আশ্বস্ত হয়েছে যে, আমেরিকা থেকে আমদানি করা তুলাতে বোল উইভিল বা তুলার ভোমরা পোকা থাকার কোনো উপায় বা সম্ভাবনা নেই।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, যৌথভাবে কাজ করার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করতে পারা এবং একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে সমৃদ্ধি বাড়ানো ও বাণিজ্যের বাধাগুলো দূর করার একটি বড় উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, আমেরিকান ভোক্তারা যেহেতু বাংলাদেশে উৎপাদিত টেকসই, উচ্চমানের পোশাকের ওপর নির্ভর করে, তাই বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে উচ্চমানের আমেরিকান তুলার প্রয়োজন রয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয় জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির বিকাশ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ এবং বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অব্যাহত রাখতে আগ্রহী।

গত ২২ বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তুলা শিল্পের সহযোগিতায় আমদানি করা তুলার ফিউমিগেশন বা বিষবাষ্পীকরণের মাধ্যমে পতঙ্গমুক্ত করার বাধ্যবাধকতা বাতিলের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ তুলা আমদানির দিক থেকে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ, যা দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের তুলার সপ্তম বৃহত্তম রপ্তানি বাজারে পরিণত করেছে। এর আর্থিক মূল্য ২০২২ সালে ৪৭৫ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

আরও খবর: