দেশজুড়ে

নিয়ে গেলো গলার চেইন, নগদ টাকা-স্মার্ট ঘড়ি

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২১ মে ২০২৩ , ৪:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বরগুনায় অভিনব কায়দায় নির্মাণাধীন একটি বাড়ির দ্বিতীয় তলার বারান্দার গ্রিল কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। পাশের একটি বাড়িতে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে চুরির আগে-পরের দৃশ্য ধরা পড়ে।

একটি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েক মিনিটের ব্যবধানে রাস্তা হয়ে ভবনের একটা চিকন গলিতে ঢোকেন দুই ব্যক্তি। এ সময় একজনের মাথায় গামছা ও আরেকজনের মাথায় মুখোশ পরা ছিল। সোয়া দুই ঘণ্টা পর কাঁধে ব্যাগ নিয়ে একজন আর নগ্ন অবস্থায় কাপড় হাতে একজন ওই চিকন গলি দিয়ে বেরিয়ে আসেন।

আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, ‘ড্রোনের মতো’ কিছু একটা দ্রুত গতিতে উড়ে আসছে। এরপর ওই দুই ব্যক্তি ভবনের পাশ দিয়ে হেঁটে যান। আবার সোয়া দুই ঘণ্টা পর একজন ব্যাগ কাঁধে আর অন্যজন নগ্ন অবস্থায় কাপড় হাতে ফিরে আসেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দিনগত রাত ৩টার দিকে সদর উপজেলার পৌর-শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যাংক কলোনি এলাকার মো. ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন ভাড়াটিয়া মো. আলতাফ হোসেনের বাড়িতে এ অভিনব কায়দায় চুরির ঘটনাটি ঘটে। শুক্রবার বিকেলের এ ঘটনায় ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করেন।

ভাড়াটিয়ারা জানান, স্ত্রী-সন্তানসহ মোট চার-পাঁচজনকে নিয়ে আলতাফ হোসেন ওই বাসার দোতলায় ভাড়া থাকেন। দোতলা এবং বারান্দায় লোহার গ্রিল থাকায় গরমে রাতে বারান্দার দরজা খোলা রেখে ঘুমাতেন তারা। ঘটনার দিন একই কারণে দরজা খোলা ছিল। এ সুযোগে বারান্দার গ্রিলের পাঁচটি লোহার রড কেটে ভেতরে প্রবেশ করে চোরচক্র। গলা থেকে সোনার চেইন, ডিএসএলআর ক্যামেরা, দামি স্মার্ট ঘড়ি ও নগদ টাকা নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘স্ত্রী হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে গলায় হাত দিয়ে চেন না পেয়ে আমাকে ডেকে তোলে। আশপাশে খেয়াল করে দেখি মশারি কাটা এবং পাশে একটি লাইটার পড়ে আছে। বারান্দায় গিয়ে গ্রিল কাটা দেখে নিশ্চিত হই ঘরে চুরি হয়েছে।’

আলতাফ হোসেনের স্ত্রী মোসা. কাজল বলেন, ‘হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে গলায় চেন না দেখে স্বামীকে ডেকে উঠাই। প্রথমে তাকে ঘরে চোর ঢুকেছে বললে বিশ্বাস করেনি। ভাবে আমি কোনো স্বপ্ন দেখেছি।’

আলতাফের ছেলে ফাহাদুল ইসলাম জিলিন বলেন, পড়াশোনার কারণে বরিশাল থাকায় মোবাইলে আমাকে জানানো হয় বাসায় চুরি হয়েছে। পরে সকালে বরগুনায় এসে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখি, ড্রোন উড়িয়ে বাসার পরিস্থিতি দেখে গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে চোর। সবথেকে ভয়াবহ বিষয় চুরির সময় নগ্ন ছিল চক্রের একজন।

তিনি আরও বলেন, রাত ১টার পর থেকে তারা চুরির পরিকল্পনা করে ঘোরাঘুরি শরু করেন এবং রাত ৩টার দিকে ঘরে ঢুকে। পৌনে ৪টার দিকে ঘর থেকে তারা বের হয়ে চলে যায়।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক ভাড়াটিয়া বাড়ি পরিবর্তনের চিন্তা করছেন। এছাড়া নতুন কোনো ভাড়াটিয়া এ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

ওই এলাকার একজন স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান মিয়া বলেন, এলাকায় এর আগেও চুরি হয়েছে। এক মাসের মধ্যে দোতলা এবং নিচতলার গ্রিল কেটে তিন-চারটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে তিনদিন আগের ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিশ্চিন্তে কেউ রাতে ঘুমাতে পারছেন না।

এ বিষয়ে শনিবার (২০ মে) বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আহম্মেদ  বলেন, কিছু ছিচকে চোর বেড়েছে বরগুনায়। গত মাসেও চারটি চুরির মামলা হয়েছে থানায়। যার মধ্যে তিনটি শনাক্ত করেছি। তবে এদের আটকের পর আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে আবারও একই ঘটনা ঘটায়।

ওসি আরও বলেন, বরগুনায় পুলিশি টহল টিম বাড়িয়েছি। আগামীতে যাতে চুরির ঘটনা না বাড়ে এ ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।

আরও খবর: