আইন-আদালত

৫৮২ কোটি টাকা কি বাতাসে খেয়েছে : বিসিআইসিকে হাইকোর্ট

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৫ জুন ২০২৩ , ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) আদালতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘টাকা কি বাতাসে খেয়েছে? কারা এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত, কারা এ টাকা আত্মসাৎ করেছে— সুনির্দিষ্ট করে তাদের নাম দিন।’

‘দুর্নীতিবাজদের টলারেট করা হবে না। দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে সরাসরি জেলে ঢুকায়ে দেব।’

বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

বিসিআইসির পক্ষে আদালতে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় আবেদন করা হয়। এ সময় আদালত রাগান্বিত হয়ে ওই মন্তব্য করেন।

দুর্নীতিবাজদের টলারেট করা হবে না। দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে কোর্ট থেকে সরাসরি জেলে ঢুকায়ে দেব– হাইকোর্ট

আদালতে বিসিআইসির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোল্লা কিসমত হাবিব। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। পরে আদালত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ জুলাই সময় নির্ধারণ করে আদেশ দেন।

গত ৫ জুন ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বিসিআইসিকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন  হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পাশাপাশি দুদককে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এমন আদেশ দেন।

dhakapost

ওই সময় আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।

‘৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাৎ’ শিরোনামে দৈনিক প্রথম আলোতে গত ৫ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে এনে আদালত ওই আদেশ দেন।

গত ৫ জুন ৫৮২ কোটি টাকার সার আত্মসাতের বিষয়ে বিসিআইসিকে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন  হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। পাশাপাশি দুদককে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত

প্রতিবেদনের একাংশে বলা হয়, সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার টন রাসায়নিক সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছে পরিবহনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পোটন ট্রেডার্স। এতে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৫৮২ কোটি টাকা।

মেসার্স পোটন ট্রেডার্স সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খানের (পোটন) মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কামরুল আশরাফ খান সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতিও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, তিনিই মূলত দেশে সারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন।

dhakapost
নরসিংদী-২ আসনের সাবেক এমপি কামরুল আশরাফ খান (পোটন) / ফাইল ছবি 

পোটন ট্রেডার্স যে সার আত্মসাৎ করেছে তা উঠে এসেছে সারের আমদানিকারক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি প্রতিষ্ঠান রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) দুটি তদন্তে। সারগুলো খালাস হয়েছিল ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ মে’র মধ্যে।

সার সরবরাহ না করার সাত মাস পার হলেও কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বিসিআইসি। সর্বশেষ গত ২০ ডিসেম্বর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বিসিআইসির পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়।

আরও খবর: