অপরাধ

ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের হাতে জিম্মি শিক্ষকরা

  জাগোকন্ঠ ২৩ জুন ২০২৪ , ৯:২৯ পূর্বাহ্ণ

শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সোবাহান মুন্সীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে শিক্ষকরা। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দ, শিক্ষাকদের সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদানসহ অফিসের সকল কাজে তাকে সন্তুষ্ট করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে শিক্ষকরা। চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষকগণের মাঝে। হয়রানির ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না অধিকাংশ শিক্ষক।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ ছোবহান মুন্সী ভেদরগঞ্জ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে নানা অনৈতিক কাজে জড়িযে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছে উপজেলার সাধারণ শিক্ষকগণ। স্কুলের বিভিন্ন বরাদ্ধ থেকে তাকে দিতে হয় মোটা অংকের সম্মানী। সম্মানী ছাড়া বিলে স্বাক্ষর করেন না এই কর্মকর্তা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে স্লীপ বাবদ ৪৩ লাখ ২৭ সাতাশ হাজার ৫০০ টাকা, ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ২২ লাখ টাকা, রুটিন ম্যান্টেনেন্স বাবদ ২ লাখ টাকা, আর প্রাক- প্রাথমিক শ্রেণকক্ষ সজ্জিত করণ বাবদ ১৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর বরাদ্দ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ওই বরাদ্দ তালিকা ভূক্ত স্কুল সমুহের ব্যাংক হিসেবে বিতরণ করে দেন। নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যালয় সমুহের কাজ সম্পান্ন হওয়ার পর শিক্ষা অফিসে কাজের ভাউচার জমা দিলে শিক্ষা অফিসার এসব ভাউচার অনুমোদনের পর একাউন্স অফিসের কার্যক্রম শেষে প্রধান শিক্ষকগণ বিল উত্তোলন করতে পারেন। এসব বরাদ্দ থেকে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ টাকা সম্মনীস না দিলে কাজে বিল ভাউচার অনুমোদন করেন না উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান মুন্সী। নাগত টাকায় সম্মানী দিতে হয় তাকে। তাই অনেকটা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে এই কর্মর্কর্তা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ভূক্তভোগী প্রধান শিক্ষগনের। এতে শিক্ষকদের মাঝে চরম হতাশার তৈরি হয়েছে।
এছাড়া. সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেহাল ভোটকেন্দ্র গুলো জরুরী মেরামতের জন্য বিভিন্ন বিদ্যালয়ে টাকা বরাদ্ধ করে সরকার। ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৫টি বিদ্যালয়ে জরুরী মেরামতের জন্য ৪ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। এ বরাদ্দ থেকেও তাকে বরাদ্দের অর্ধেক পরিমান টাকা সম্মানী দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী শিক্ষকরা। বরাদ্ধ পাওয়ার সাথে সাথেই শিক্ষকদের অর্ধেক টাকার কাজ করার মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও।

নামপ্রকাশ না করার শর্তে অধিকাংশ প্রধান শিক্ষক জানান, আমাদের নামে পুরো টাকা স্কুলে একাউন্টে দেয়া হয়েছে। আমিতো অস্বীকার করতে পারবো না। কিন্তু আমরা তাকে নগদ টাকা দিয়ে এসেছি- না হলে ভাউচার অনুমোদন করবে না। কিন্তু আমাদের কাছেতো কোন প্রমান নেই। আমরা তাদের কাছে জিম্মি। স্যার টাকা ছাড়া কোন কাজ করে না। কিন্তু টাকা নেয়ার প্রমান করা অনেক কঠিন। অনেক সময় আমরা নিজেরাই চোর হয়ে যাই। কিছু করার থাকে না। ভাই আপনি যদি নিউজ করেন আমরাই আবার নির্যাতনের স্বীকার হবো। আমাদের বিপদে ফেলবেন না?

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেহাল নির্বাচনী ভোট কেন্দ্র গুলো মেরামতের বরাদ্দ সর্ম্পকে জানতে চাইলে তারা বলেন, টাকা আশার পরপর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ ছোবহান মুন্সী স্যার অর্ধেক টাকা অফিস খরচ বাবদ রেখে- বাকী টাকার কাজ করতে বলেছেন। স্কুলে স্কুলে গিয়ে তিনি কাজ নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা এরচেয়ে বেশী কাজ কিভাবে করবো? এখন আপানার কাছে যদি বলি স্যারতো স্বীকার করবে না। আমরাই আবার বিপদে পরবো।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঃ ছোবহান মুন্সী বলেন, আমি কারো কাছে টাকা নিয়েছি আমার সামনে এসে বলুক। এসব মিথ্যা, ভীত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই না।

আরও খবর: