জাতীয়

পরিবার চালাতে পড়ালেখা ছেড়েছে ওরা

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১ মে ২০২৩ , ৭:১৫ পূর্বাহ্ণ

সিয়াম মোল্লার বসয় ১৪ বছর। বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায়। যে বয়সে বই নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, সে বয়সে একটি খোলা হোটেলে কাজ করে সে। মাসে বেতন পায় ছয় হাজার টাকা। সেটাও নিজের হাতে পায় না। প্রতিবেশী এক খালার মাধ্যমে টাকাগুলো চলে যায় গ্রামের বাড়িতে। 

সোমবার (১ মে) রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় সঙ্গে আলাপকালে সে এসব কথা জানায়।

সিয়াম জানায়, চাঁদপুরে গ্রামের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করেন বাবা। তিন ভাইয়ের মধ্যে সিয়াম সবার বড়। ছোট ভাই মাদ্রাসায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। আরেক ভাইয়ের বয়স চার বছর। তিন বছর আগে মা মারা গেলে বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। ক্লাস সিক্স পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ হয়েছে সিয়ামের। মা মারা যাওয়ায় আর পড়ালেখা এগোয়নি। পরিবারের অর্থের যোগান দিতে এক বছর আগে ঢাকায় পাড়ি জমায় সে। এরপর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে একটি খোলা হোটেলে কাজ করে।

এদিকে ২০২০ সাল থেকে ঢাকার সদরঘাট থেকে গাজীপুরগামী একটি বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করে ফজলে রাব্বী (১৯)। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে জীবিকার তাগিদে কাজে যোগ দেয়। বর্তমানে সে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে।

রাব্বী জানায়, সাত সদস্যের পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবা একসময় কাজ করতেন। তবে অসুস্থ থাকায় এখন বাসাতেই থাকেন। বাসের হেলপারি করে যা আয় হয় তার পুরোটাই পরিবারের পেছনে ব্যয় হয়। এর মধ্যে কোনোদিন রাস্তায় বাস না নামলে তার আয়ও বন্ধ থাকে। তখন ধার করে সংসার চালাতে হয়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানায় সে। পড়ালেখা করার ইচ্ছা থাকলেও জীবিকার তাগিদে সেটি আর করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব শ্রমিক দিবস আজ, যা ‘মে দিবস’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে পয়লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরও অনেক দেশে দিন বেসরকারিভাবে পালিত হয়। বাংলাদেশে দিনটি যথাযথভাবে পালিত হয়ে আসছে। মে দিবসে সরকারি ছুটি থাকে। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়ে থাকেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন দিনটি পালন করতে শোভাযাত্রা, শ্রমিক সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানান কর্মসূচি হাতে নিয়ে থাকে।

আরও খবর: