দেশজুড়ে

পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১২ এপ্রিল ২০২৩ , ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

কুমিল্লায় পরকীয়া প্রেমের জের ধরে পরিবহন নেতা রেজাউল করিম রাজা মিয়াকে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দক্ষিণ সতানন্দি গ্রামের শান্তি রঞ্জন শীলের ছেলে তাপস চন্দ্র শীল (২৫), একই গ্রামের আউয়াল কমিশনারের বাড়ির মৃত রেজাউল করিম রাজা মিয়ার স্ত্রী আলো আক্তার (৩০) এবং চান্দিনা উপজেলার বশিকপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার জয়নাল মেম্বার বাড়ির আবদুস সামাদের ছেলে মো. রাশেদ (২৮)। রায়ের সময় আসামি রাশেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।

আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার পুরাতন চরচাষি ছায়েদ আলী মুন্সী বাড়ির মৃত ছোয়াব আলী বেপারীর ছেলে মৃত রেজাউল করিম রাজা মিয়া তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার শ্বশুর সাবেক কাউন্সিলর আউয়াল মিয়ার ঘরের উত্তর পাশে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছিলেন। তিনি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২০১৪ সালের ১৩ জুন আউয়াল কমিশনারের বাড়ির উঠানে রাজা মিয়ার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পরদিন নিহত রাজা মিয়ার বাবা ছোয়াব আলী বেপারী বাদী হয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

পুলিশ মামলার তদন্তের শুরুতে নিহতের স্ত্রী আলো আক্তারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন আলো আক্তার। তিনি পরকীয়া প্রেমের কারণে তাপস চন্দ্র শীল এবং রাশেদের সহযোগিতায় স্বামী রাজা মিয়াকে হত্যার স্বীকারোক্তি দেন। তার স্বীকারোক্তির পর তাপস এবং রাশেদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে আসামিরা সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দাউদকান্দি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রঞ্জন কুমার ঘোষ মামলার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত ২০১৫ সালের ২৭ মে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করলে রাষ্ট্রপক্ষের ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি এবং স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করে পলাতক আসামি তাপস চন্দ্র শীল, পলাতক আসামি  আলো আক্তার এবং আসামি মো. রাশেদকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আসামি রাশেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং অপর আসামি রাজা মিয়া হত্যার মাস্টারমাইন্ড আলো আক্তার ও তাপস চন্দ্র শীল পলাতক রয়েছেন।

আরও খবর: