জাতীয়

ডুবে যাওয়া জাহাজ ‘পানগাঁও এক্সপ্রেস’ উদ্ধার হবে কবে?

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৭ জুলাই ২০২৩ , ৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগর উপকূলে নোয়াখালীর ভাসানচরের কাছে ডুবে যাওয়া কনটেইনারবাহী জাহাজ ‘এমভি পানগাঁও এক্সপ্রেস’ উদ্ধারে এখনো অভিযান শুরু হয়নি। ঘটনার পর ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও জাহাজটি উদ্ধারে এখনো সংশ্লিষ্টরা যথাযথ উদ্যোগ নিতে পারেননি। এতে করে জাহাজটিতে থাকা সব মালামাল নষ্টের আশঙ্কা করছেন আমদানিকারকরা। 

কয়েকজন আমদানিকারক জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে তারা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছেন। কিন্তু কেউ তাদের পণ্য উদ্ধারে যথাযথ আশ্বাস দিতে পারেননি। এছাড়া জাহাজটি কবে নাগাদ উদ্ধার করবে সেটি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি সংশ্লিষ্টদের কেউ।

এদিকে, উদ্ধারের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে জাহাজটি তাদের মালিকানাধীন। তবে এটি ভাড়া নিয়েছে সি গ্লোরি শিপিং এজেন্সিস লিমিটেড। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে বন্দরের চুক্তি হয়েছে জাহাজটি পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব তাদের। সে অনুযায়ী দুর্ঘটনার কবলে পড়া জাহাজটি উদ্ধার করতে হবে সি গ্লোরি শিপিং কোম্পানিকে। এক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ তত্ত্বাবধান করবে। যদিও প্রাথমিকভাবে জাহাজটি উদ্ধারের চেষ্টা করেছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পরপরই সংস্থাটি দুটি টাগবোট কান্ডারি-১১ ও কান্ডারি-১২ পাঠিয়েছিল। শক্তিশালী বোট দুটি দুর্ঘটনার কবলে পড়া কনটেইনারবাহী জাহাজটিকে উদ্ধার করতে পারেনি।

তবে, দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। বর্তমানে জাহাজটি উদ্ধারে যেহেতু বন্দর কর্তৃপক্ষ তৎপরতা চালাচ্ছে, সেহেতু প্রতিষ্ঠানটি আপাতত চিন্তিত না। যদি কোনো কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ অপারগতা প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে নোটিশ দিয়ে জাহাজটি স্ক্র‍্যাপ হিসেবে উদ্ধার করবে বিআইডব্লিউটিএ।

এর আগে গত ৬ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জের পাঁনগাও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনালে যাওয়ার পথে ডুবে যায় এমভি পানগাঁও এক্সপ্রেস। ওই সময় জাহাজটিতে বিভিন্ন আমদানিকারকের ৯৬ কনটেইনার (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) মালামাল ছিল। দুর্ঘটনার দিনই তিনটি কনটেইনার ভেসে যায়। এরপর বেশিরভাগ কনটেইনার ডুবে গেলে এখনো কিছু কনটেইনার পানিতে পুরোপুরি ডুবেনি। এসব কনটেইনারে থাকা মালামাল রক্ষার আশায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিচ্ছেন আমদানিকারকরা।

জাহাজটিতে মোবাইল ফোনের সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী হালিমা গ্রুপের এক কনটেইনার মালামাল রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, আমাদের পণ্যবাহী কনটেইনারটি জাহাজের ওপরের দিকে রয়েছে বলে ধারণা করছি। এটি যেহেতু ডুবেনি, সেহেতু দ্রুত উদ্ধার করা গেলে মালামাল অক্ষত পাওয়া যেত। তবে উদ্ধার প্রক্রিয়া এভাবে ধীরে হওয়ার কারণে মালামাল অক্ষত পাওয়া যাবে কি না সন্দিহান।

জাহাজ পরিচালনাকারী সি গ্লোরির ব্যবস্থাপক মাইনুল হোসেন জানান, আমাদের টিম দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জাহাজটি উদ্ধারে আমাদের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে ওই এলাকার আশেপাশে সাগর উত্তাল রয়েছে। এ কারণে উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করতে ব্যাঘাত ঘটছে।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, এমভি পানগাঁও এক্সপ্রেস ডুবে যাওয়ার পরও এতোদিন উদ্ধার না হওয়া দুঃখজনক। এর মধ্য দিয়ে জাহাজ উদ্ধারে আমাদের সীমাবদ্ধতা বুঝা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, জাহাজটি উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে সি গ্লোরি শিপিং এজেন্সিস। আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।

বিআইডব্লিউটিএ’র চট্টগ্রামের যুগ্ম পরিচালক সবুর খান  বলেন, জাহাজ উদ্ধারের বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ তৎপর রয়েছে। তারা ভাড়া দেওয়া প্রতিষ্ঠানটিকে দিয়ে জাহাজটি উদ্ধার করছে বলে জেনেছি। তবে তারা এটি উদ্ধার করতে না পারলে সবশেষ নোটিশ দিয়ে স্ক্র‍্যাপ হিসেবে জাহাজটি বিআইডব্লিউটিএ উদ্ধার করবে।

আরও খবর: