লাইফস্টাইল

কোন বয়সে সিগারেটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি?

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১৮ জুন ২০২৩ , ২:৪৯ পূর্বাহ্ণ

সিগারেট যে কতটা ক্ষতিকর তা এখন ইন্টারনেটের দৌলতে ছোট বাচ্চাও জানে। কিন্তু সুখটান থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় নেই। এখন তো স্টাইল স্টেটমেন্টের অঙ্গই হয়ে উঠেছে স্মোকিং। ছেলেদের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিচ্ছে মেয়েরাও।

এই সিগারেট খাওয়া যে স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর, অনেকেই জানেন। কিন্তু তাতেও অনেকেই তোয়াক্কা না করে সিগারেট খেতে থাকেন।

বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে সিগারেটের বিপুল জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু কোন বয়সের মানুষের মধ্যে এই সিগারেটের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি?

সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, ধূমপানের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা দিচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত রোমাঞ্চ অনুভব করা থেকে শুরু করে বড় হওয়ার দিকে প্রথম পা ফেলার সময়টায় তরুণ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি করে দেখা দিচ্ছে। আর তাতেই সমস্যা বাড়ছে।

সাধারণত, একটা বয়সের পর শারীরিক কারণে অনেকেই ধূমপান ছেড়ে দিতে চেষ্টা করছেন, কেউ কেউ ছেড়েও দিচ্ছেন কিন্তু তরুণ প্রজন্মের কাছে এই ধূমপানের আসক্তি অতিরিক্ত পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন সকলেই।

ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ ১৮এর খবরে বলা হয়, ধূমপান নিয়ে এই তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও একটি নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি তৈরি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বলছেন, দশম শ্রেণি পাশ করার পর পড়ুয়াদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বেশি মাত্রায় দেখা দিচ্ছে।

ধূমপানের আসক্তি দূর করার উপায়

এদিকে কিছু নিয়ম মানলেই সিগারেট ছাড়া সহজ হয়ে যাবে। অনেকে আবার ভাবেন এতদিনের নেশা হুট করে ছেড়ে দিলে শরীর খারাপ হবে। কার্ডিওলজিস্টরা বলছেন, একবারে ছাড়ার দরকার নেই। ধীরে-সুস্থে ছাড়ুন। শরীরকে যা সওয়ানো হবে তাই সইবে। খারাপ নেশা ছাড়তে শুরু করলে শরীরও নিজেকে ডিটক্স করা শুরু করবে। টক্সিন কমতে থাকবে শরীরে। আগের থেকে অনেক সুস্থ ও তরতাজা বোধ হবে।

১. দিনে যদি পাঁচ প্যাকেট সিগারেট কিনতেন, সেখানে এক প্যাকেট কিনুন। সারাদিনে বরাদ্দ যদি ১০টা সিগারেট হয়, সেটা কমিয়ে দুটোতে আনুন। এখন ভাবছেন, কী করে এত কৃচ্ছসাধন করবেন? দিনের যে যে সময়টা সিগারেট খান, খেয়াল করুন। ঠিক সেই সময়েই সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা জাগলে মুখে কয়েকটা মৌরির দানা বা লবঙ্গ ফেলে দিন।

২. নিকোটিনের আসক্তিকে কমিয়ে দেয় মিন্ট। তাই পকেটে রাখুন মিন্ট জাতীয় চুউইং গাম। সেটা আবার গাদাখানেক খেয়ে নেশা ধরিয়ে ফেলবেন না!

৩. অনেকে ভাবেন সিগারেট কমাতে বেশি করে চা-কফি খাবেন। ঠিক যে সময়টা মাথা দপদপ করছে, কাজের চাপ বেশি পড়েছে সেই সময় সিগারেট না খেয়ে বরং কফি বা চা খেয়ে নেবেন। এটা আরও ক্ষতিকর। ক্যাফেইন স্নায়ু ও পেশিকে আরও শুষ্ক করে তোলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার চেয়ে বরং পানি খান বেশি করে। সিগারেট কমিয়ে দিলে শরীরে যে অস্থিরতা তৈরি হয় তা কমাতে পারে পানি। শরীর আর্দ্র থাকে, ফলে নেশার ইচ্ছে জাগে না।

৪. ধোঁয়া টানার ইচ্ছে হলে জোয়ান, চিকলেট, আমলকি জাতীয় কিছু মুখে রাখুন। সিগারেট ধরানোর পর পুরোটা না টেনে অর্ধেক ফেলে দেওয়ার অভ্যাস করুন। ক্রমশ তা বাড়িয়ে এক চতুর্থাংশ টেনে ফেলে দিন।

৫. সিগারেট যখন কমিয়ে আনবেন তখন ড্রাই ফ্রুটস বা টক জাতীয় ফল পরিমাণ বুঝে খান। কমলালেবু, পাতিলেবুর অ্যান্টিটক্সিন ক্ষমতা শরীরকে সুস্থ রাখে। এতদিন শরীরে নিকোটিন জমে যে ক্ষতি হয়েছে, তা ধীরে ধীরে সারিয়ে তোলে। ড্রাই ফ্রুটসে ক্যালোরি বেশি থাকায় শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরবর্তী পর্যায়ে শরীরকে ডিটক্স করে।

ধূমপান ছাড়তে চাইলে যা করবেন

৬. ধূমপান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলে সেই সময়ে হাতের কাছে নোনতা খাবার রাখুন। ধূমপানের জন্য মন ছটফট করলেই নোনতা খাবার খান। দেখবেন এতে ধূমপানের তেষ্টা অনেকটা মিটে যাবে।

৭. পজিটিভ ভাবনা চিন্তা করুন। অন্য কোনও কাজে মন দিন। সেই সঙ্গে নিজেকে একটা রুটিনের মধ্যে বেঁধে ফেলুন। একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে ওঠা, শরীরচর্চা, সুষম খাওয়া-দাওয়া। দেখবেন অনেক ভালো আছেন। যদি কোনো সিগারেট লুকিয়েও রাখেন তাহলে প্যাকেট সুদ্ধ বাইরে ফেলে দিন। আখেরে লাভ হবে আপনারই।