দেশজুড়ে

শুকনো মৌসুমেও দেওয়ানগঞ্জের যমুনা- ব্রহ্মপুত্রে ভাঙন অব্যাহত

  জাগোকন্ঠ ৩০ অক্টোবর ২০২৩ , ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

দেওয়ানগঞ্জ (জামলপুর) প্রতিনিধি:
বর্ষা মৌসুম শেষ দুই মাস আগেই । নদীতে সামান্য পানি । তবুও দুই পাড় ভাঙছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী । প্রতিদিন ফসলি জমি সহ বসত ভিটা হারাচ্ছে নদীপাড়ের মানুষেরা ।
চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় বন্যার পানি চারধাপে প্রবেশ ও হ্রাস পেয়েছে। প্রতিবার পানি প্রবেশের সময় করাল গ্রাসের শিকার হয়েছে দেওয়ানগঞ্জবাসী । বর্ষা শেষ । এখন শুকনো মৌসুম তবুও নদ নদীতে ভাঙন অব্যাহত ।
যমুনা নদীর ভাঙনে প্রতিদিন ফসলি জমি ও বসতভিটা হারাচ্ছে উপজেলার চিকাজানি ইউনিয়নের বড়খাল, মাঝি পাড়া, চর ডাকাতিয়া, খোলাবাড়ী এবং চুকাইবাড়ি ইউনিয়নের টিনের চর ও চর হলকা হাবড়া বাড়ী এলাকার মানুষেরা।
ব্রহ্মপুত্র নদ ভাঙন অব্যাহত রেখেছে বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের ভাঙ্গারপাড়া, পোল্যাকান্দি, ঝালোরচর, সহ চর আমখাওয়া ইউনিয়নের সানন্দবাড়ীর পাটাধোয়াপাড়া, পশ্চিমপাড়া, লংকারচর, মুকিরচর ও টুপকারচরে । ভাঙন হুমকিতে রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ , মসজিদ, মাদ্রাসা , দেওয়ানগঞ্জ টু সানন্দবাড়ির একটি প্রধান সড়ক সহ কোটি টাকার সরকারি বেসরকারি স্থাপনা । বিলিন হওয়ার পথে টুপকারচর।
যমুনার ভঙনে নিঃশ্ব হওয়া জহুরুল, তোতা মিয়া, বারেক তৈবুর রহমান ও মাসুদ মিয়া বলেন বর্ষা শেষ হয়েছে । ভেবেছিলাম এবারের মতো বেঁচে গেলাম । আগামী বর্ষা পর্যন্ত ভিটাতে থাকতে পাড়বো । তা আর হলো না । যমুনা প্রতিদিন অল্প অল্প করে ভাঙ্গে । আবার হঠ্যাৎ করে দুই তিন দিন তুমুল ভাঙে । এই অসময়ের ভাঙনে আমরা বসত ভিটা হারিয়ে নিঃশ^ ।
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে বসত ভিটার চেয়ে ফসলি জমি বেশি । পোল্যাকান্দি এলাকার মিয়াজল , জাহাঙ্গীর, কাক্কু, ধলা মিয়া বলেন, বর্ষায় নদীর ভাঙন সহ্য হয় কিন্তু এই অসময়ের ভাঙন সহ্য হয় না । এই ভাঙনের ফলে শরিষা, ভুট্টা , মরিচের আবাদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । এতে সারা বছর সংসার চালানো কষ্ট হয়ে যাবে ।
ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় বসতভিটা হারা পরিবারগুলো নতুন করে ঘর উঠানোর জায়গা না পেয়ে রাস্তার ধারে ও পরিত্যাক্ত রেল লাইনের ধারে ছাপড়া ঘর তুলে মানবতার জীবনযাপন করছে ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন্নাহার শেফা বলেন, ভাঙনের এলাকাগুলো সরেজমিন দেখে সবসময় প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করছি। এমনকি ভাঙন রোধ করতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন , আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী স্যার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন । ইতিমধ্যে এলাকাগুলোতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে । আশা করি দেওয়ানগঞ্জবাসীর ভাঙন সমস্যা সমাধান হবে ।

আরও খবর: