দেশজুড়ে

শরীয়তপুরে যাতায়াতের রাস্তার অভাবে ভোগান্তিতে পৌরসভার আট পরিবার

  জাগোকন্ঠ ২০ মে ২০২৪ , ৫:০৬ অপরাহ্ণ

মাহাবুব তালুকদার:

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ পৌরসভায় বসবাসকারী আটটি পরিবার বাড়ি থেকে বেড় হওয়ার রাস্তার অভাবে চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছে। ১৯ মে (রবিবার) সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাজনিন নাহার রুমি, রুবিনা বেগম, রাজিয়া বেগম, নুরুন নাহার রত্না, সুমন মাদবর সহ প্রায় আটটি পরিবারের বাড়ি থেকে বেড় হওয়ার নিজস্ব কোন রাস্তা নেই। তারা দীর্ঘদিন যাবত ভেদরগঞ্জ হেড কোয়াটার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গা ব্যবহার করে বাড়ি থেকে বের হত।

বর্তমানে স্কুল কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তাদের সীমানা প্রাচীর নির্মান করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রাচীর নির্মানের কাজ শুরু করে ফলে ভুক্তভোগী পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। যাতায়াতের রাস্তার অভাবে ব্যাহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় নাজনিন নাহার রুমি, মুক্তি হাওলাদার, রুবিনা, রাজিয়া, বিল্লাল হোসেন,জুবায়ের আলম, আলমগীর খাঁন গং ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি আবেদন করেন।আবেদনে উল্লেখ করা হয় ভুক্তভোগী পরিবারের পূর্ব পুরুষগন স্কুল প্রতিষ্ঠায় তাদের নিজেদের জমি দান করেন এবং পূর্ব পুরুষগন সহ তারা স্কুলের জায়গা দিয়ে যাতায়াত করতেন। তারা আবেদনে আরও উল্লেখ করেন যে স্কুলের এই জায়গা ছাড়া তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার বিকল্প কোন রাস্তা নেই। তাই তাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য একটি স্থায়ী রাস্তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী বাসিন্দা শিক্ষানুবিশ আইনজীবী নাজনিন নাহার রুমি বলেন, এখানে আমাদের পূর্ব পুরুষের বড়ি ঘর। সারাজীবন স্কুলের জায়গাগুলো উন্মুক্ত ছিল আমরা এইদিক দিয়ে যাতায়াত করতাম।স্কুলেও আমাদের জায়গা আছে। এমতাবস্থায় আমরা এখানে নতুন করে বাড়ি ঘর নির্মাণ করছি।এখন স্কুল কর্তৃপক্ষ বাউন্ডারি করে আমাদের আটকে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করছে।আমরা তখন রোডের জন্য দাবী জানাই। আমরা এতগুলো পরিবার এখান থেকে কিভাবে বের হবো।স্কুল আমাদের রোড দিতে অপারগতা জানায়। এরপর আমরা ইউএনও মহোদয় বরাবর একটি লিখিত আবেদন করি। তখন ইউএনও মহোদয় এখানে আসেন এবং স্কুলের প্রাচীর এর মধ্যে একটি পকেট গেট করে অস্থায়ী রোডের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে জানান। পরবর্তীতে একটি স্থায়ী রোড করে দেয়া হবে।আমরা আমাদের ওয়ার্ড কমিশনার বাবুল হাওলাদার কাছে জানতে চাই স্থায়ী রোড কোন দিক দিয়ে দিবেন।তখন তিনি জানান স্থায়ী রোড কখনোই দেয়া সম্ভব না।আমি কোন দিক দিয়ে রোড দিব। তোমাদের সারাজীবন এই স্কুলের মধ্যে দিয়েই যেতে হবে। এখন আমাদের দাবী আমাদেরকে স্থায়ী রোড করে দেয়া হোক।আমরা পৌরসভার বাসিন্দা এটা আমাদের নাগরিক অধিকার।আমাদের স্থায়ী রোড করে দেয়া হোক।

ভুক্তভোগী রুবিনা বেগম জানান, আমরা জন্ম থেকেই স্কুলের এই রাস্তা ব্যবহার করে আসছি। আমাদের যাতায়াতের বিকল্প কোন রোড নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষ দেয়াল নির্মান করে আমাদের রাস্তা বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে। এখন আমাদের দাবী আমাদের স্থায়ী রাস্তার ব্যবস্থা করা হোক।

ভেদরগঞ্জ হেড কোয়াটার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল গাইন জাগো কন্ঠকে জানান, আমাদের স্কুলের সীমানা প্রাচীর নিয়ে প্রতিবেশীর সাথে একটু ঝামেলা আছে। প্রতিবেশীরা এই ঝামেলা নিয়ে আমাদের স্কুলের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।তার প্রেক্ষিতে ইউএনও মহোদয় গত বৃহস্পতিবার এখানে আসেন এবং পর্যবেক্ষণ করে তাদের যাতায়াতের জন্য একটি অস্থায়ী পকেট গেটের ব্যবস্থা রাখতে বলেন।তাছাড়া ৭ নং ওয়ার্ডের কমিশনার বাবুল হাওলাদারকে বলেন কিভাবে একটি স্থায়ী যাতায়াতের রাস্তা বের করা যায় তা মেয়রের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা করতে।

ভেদরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুল হাওলাদার জাগো কন্ঠকে জানান, আপাদত তারা পকেট গেইট দিয়ে যাতায়াত করবে। তাছাড়া ইউএনও মহোদয় আমাকে বলেছেন তাদের জন্য একটি স্থায়ী রাস্তার ব্যবস্থা করতে। আমি বলেছি ইনশাল্লাহ চেষ্টা করবো স্যার।

এবিষয়ে ভেদরগঞ্জ পৌর মেয়র আবুল বাশার চোকদার বলেন, ওখানে একটি স্থায়ী রাস্তার প্রয়োজন। যেহেতু এটি সরকারি জমি তাই, আমি ইউএনও মহোদয় সাথে কথা বলেছি সে আপাতত যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য একটা গেইট করে দিতে বলেছেন। ভবিষ্যতে জায়গা সংস্থান হলে মেয়র হিসেবে আমি স্থায়ী রাস্তা করে দিব।

আরও খবর: