অপরাধ

শরীয়তপুরে মাকে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করলো ছেলে

  জাগোকন্ঠ ২২ জুন ২০২৩ , ৭:৩৫ অপরাহ্ণ

মাহাবুব তালুকদার:

শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলাধীন ঘড়িষার বাজার এলাকায় নিজ গর্ভধারিণী মাকে সবজি কাটার দা-দিয়ে নির্মম ভাবে কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকারী ছেলে জাহিদ মাঝি (২৫) কে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ।

বুধবার (২১ জুন) সন্ধ্যা ৭ ঘটিকায় ঘড়িষার ইউনিয়নের বাহির কুশিয়া গ্রাম আওতাধীন ঘড়িষার বাজারে অবস্থিত হাজী জালালউদ্দিন মার্কেট এঁর তৃতীয় তলায় সেলিম মাঝির বাড়িতে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর-পরই স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করতে দেখা যায়।

নিহত হতভাগী মা নারগিছ বেগম (৪০) ঘড়িষার ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ঘড়িষার বাজারের ব্যবসায়ী সেলিম মাঝির স্ত্রী।

পুলিশ ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, ঘড়িষার বাজার হাজী জালালউদ্দিন মার্কেটের মালিক সেলিম মাঝি। সেলিম মাঝির স্ত্রী নারগিছ বেগম। তাদের ঘরে তিন ছেলে মেয়ে রয়েছে। তারমধ্যে জাহিদ বড় ছেলে। বুধবার দুপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন শেষে জাহিদের বাবা ও মা বাড়িতে ফেরেন। পরে জাহিদের মাকে ও জাহিদকে বাড়িতে একা রেখে বাবা সেলিম মাঝি নিজ ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে চলে যায়। পরবর্তীতে সন্ধায় বাবা সেলিম মাঝি ও শাহিন মাঝি এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে। পরে ডাকাডাকি করলে দরজা না খোলায় ভেঙ্গে দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিলো নিথর দেহটি তার পাশেই পড়ে ছিলো হাতের দুটি কাটা আঙ্গুল। আর ছেলে জাহিদ বঁটি দা হাতে নিয়ে ভয়ানক ভংগীতে দাড়িয়ে ছিলো। পরে স্থানীয়দের সাহায্যে তাকে আটক করে বেধে রাখা হয়। পরে ঘড়িষার বাজারে মা ও শিশু ডায়াবেটিক বেসরকারি একটি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে নড়িয়া থানার (ওসি) এসে স্থানীদের হাত থেকে স্পেশালভাবে অতিরিক্ত পুলিশ এনে হত্যাকারী জাহিদকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের স্বামী সেলিম মাঝি বলেন, আজ দুপুরে আমি আর আমার স্ত্রী নারগিছ বেগম একটি বিবাহের দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে আসি। পরে আমার কুলাঙ্গার বড় ছেলে জাহিদকে একা ও তার মা নারগিছকে ঘরে রেখে যাই। কিন্তু সন্ধ্যার সময় আমার ভাই শাহিন মাঝিকে নিয়ে বাড়ি যাই। পরে দেখি আমার ঘরের দরজা বন্ধ। পরে ডাকাডাকি করেও দরজা না খোলায় দরজা ভেঙ্গে ফেলে দেখি আমার বউ নারগিছ কে জাহিদ বডি দা দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলে রেখেছে। নারগিছ মেঝেতে পড়ে ছিল। পরে বাজারের লোকজন ডেকে খুনি জাহিদকে আটক করে আমার বউকে হাসপাতালে নিয়ে বাচাতে পারিনি। আমার ছেলে জাহিদের মাথায় সমস্যা আছে। আমি কি করবো আমার তো সব শেষ হয়ে গেলো। আমার সংসারের লক্ষীকে খুন করেছে। আমি ওর ফাঁসি চাই।

এ ঘনটায় নড়িয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসামীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যান। পরে এ বিষয় জানতে চাইলে মাকে সবজি কাটার দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে আমাদেরকে খবর দিলে ছেলের বাবা সেলিম ও চাচারা মিলে আমাদের হাতে তুলে দিলে আমরা গ্রেপ্তার করি। আর ওর বাবা বলেছে আমার স্ত্রীকে আমার ছেলে দা দিয়ে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে, আমার ছেলে জাহিদের ফাঁসি চাই। লাশটি পোষ্ট মডেমের জন্য শরীয়তপুর সরকারি হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আরও খবর: