অপরাধ

শরীয়তপুরে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও পদ্মায় অবাধে চলছে মা- ইলিশ শিকার

  জাগোকন্ঠ ২৪ অক্টোবর ২০২৩ , ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

মাহাবুব তালুকদার:

প্রজনন মৌসুমে মা-ইলিশ সংরক্ষণে প্রশাসনিক অভিযানের মধ্যেও শরীয়তপুরে চলছে অবাধে ইলিশ শিকার। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতেই অভিনব কৌশলে মাছ শিকারে ঝাঁক বেঁধে নামছে জেলেরা। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের ঢিলেঢালা অভিযানের সুযোগকে কাজে লাগিয়েই শত-শত অসাধু জেলে পদ্মায় মা-ইলিশ শিকারে মেতেছেন।

সরকারিভাবে এই জেলায় ৮০ কিলোমিটার নদী ও ২০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকা হিসেবে ঘোষনা করলেও থেমে নেই জেলেরা। কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক সিন্ডিকেট ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মদদেই চলছে মা ইলিশ নিধন ও বেচাকিনা। তবে নদীতে জাল ফেলেও আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ছেনা বলছেন জেলেরা। অভিযানের শুরুতে নদীতে জেলে নামতে কিছুটা কম দেখা গেলেও, এখন ঘটছে তার উল্টো চিত্র। সখিপুর এঁর বন্দুক্সি বাজার, ছুরিরচর, দুলারচর, কাচিকাটা, দেওয়ানবাজা, মোল্লা বাজার। গোসাইরহাটের কুচাইপট্রি, কোদালপুর মাছুয়াখালীসহ অসংখ্য অস্থায়ী আড়ৎে এসে জেলেরা মা” ইলিশ বিক্রি করছেন।

জেলার নড়িয়া, জাজিরা, ভেদরগঞ্জের সখিপুর ও ডামুড্যা গোসাইরহাট উপজেলার পদ্মনদীর তীরবর্তী এলাকার ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৪-৫ শ ভ্রাম্যমাণ আড়ৎে বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট এলাকায় ১৫ কিলোমিটার অভয়াশ্রম এলাকায় সবচেয়ে বেশি জেলে নদীতে মাছ নিধন ও বিক্রি করছে। তবে গত বছরের তুলনায় মাছ কম পেলেও পেটের দায়ে মাছ ধরতে নদীতে নামছেন অনেক জেলে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানায়, জেলায় ৮০ কিলোমিটার পদ্মা নদীর অংশ রয়েছে। যার মধ্যে অভয়াশ্রম এলাকা রয়েছে ২০ কিলোঃ ভেদেরগঞ্জে ১৫ কিলোঃ এবং নড়িয়া উপজেলায় ৫ কিলোমিটার এখানে অভয়াশ্রমের আওতাধীন রয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা মৎস্য অফিস এবং উপজেলা মৎস্য অফিস প্রতিনিয়ত অভিযান করে আসছে নদীতে। এ পর্যন্ত মা” ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে শরীয়তপুরে ১০০ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। নয়টি জেলে নৌকা জব্দ করাসহ এক লক্ষ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

স্থানীয় সালাউদ্দিন মাস্টার বলেন, সরকার নিষেধাজ্ঞা দেয় আইন করে, আমরা কেউত মানছি না। কিছু অসাধু ব্যাবসায়িরা জেলেদের মদদ দিয়ে নদীতে মাছ ধরতে নামিয়ে দেন। এতে দেশে ইলিশ মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।

সখিপুরের নদীর তীরের দেওয়ান বাজারের আরৎ মালিক মানিক ভুইয়া, বলেন, নদীতে মাছ তো পাইতেছে না। নদীতে অনেক জেলেরাই নেমেছে কিন্তু কেউ একটা দুইটা মাছ পাচ্ছে। অভিযানটা আরো এক সপ্তাহ আগে দিলে কিছু মাছ পাওয়া যেতো।

জেলে স্বপন দেওয়ান বলেন, অভিযান পিছিয়ে দিয়েছে তাই মাছ নদীতে নাই। একেবারেই মাছ নেই। আমরা কি করবো কার্তিক মাসে কোন বছর অভিযান দেয় নি সরকার। তাই আমরা মাছ কম পাচ্ছি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল হক জানান, আমরা প্রতিনিয়ত অভিযান করছি আমাদের উপজেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসন সহযোগিতা করছে। আজকেও ভেদেরগঞ্জ নড়িয়া জাজিরা গোসাইরহাট উপজেলা প্রশাসন আমাদের সাথে সহযোগিতা করছে। খন্ডকালীনভাবে যারা অবৈধভাবে মাছের ব্যবসা করে আমরা তাদের আড়ৎ ভেঙে দিয়ে আসতেছি। সুযোগে পেলেই তারা নেমে যাচ্ছে।।আমরা বিষয়টি কঠোরভাবে দেখব।

আরও খবর: