দেশজুড়ে

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

  জাগোকন্ঠ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

শাহাদাত হোসেন হিরু, শরীয়তপুর

সম্প্রতি ঢাকায় এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার সময় পর্যবেক্ষক হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া নামের এক শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) ছিঁড়ে ফেলার ঘটনায় অভিযুক্ত ডাঃ নাফিসা ইসলামের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার সময় ঐ শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়ি ডামুড্যা উপজেলার দারুল আমান ইউনিয়নের কাইলারা বাজারে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত দারুল আমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মমিনুল হক মিন্টু বলেন, পর্যবেক্ষক কখনই কোন শিক্ষার্থীর ওএমআর শিট ছিঁড়তে পারেন না। এটা বেআইনী। এটি ছিঁড়া তার অন্যায় হয়েছে। যদি হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া কোন অবৈধ পন্থা ব্যবহার করত তাহলে তার বিচার করতো। কিন্তু তার ওএমআর শিট ছিড়ে বিচার হতে পারে না। উক্ত গ্রামের আবুল কালাম রতন বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেছি অবৈধ ডিভাইজ ব্যবহার করেছে তার পাশের একজন। কিন্তু পর্যবেক্ষক নিজের শিষ্টাচার কারণে ছোঁয়ার ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেছে ডাঃ নাফিসা। আমরা এর বিচার চাই। যাতে করে আর কোন শিক্ষার্থী জীবন নষ্ট না করতে পারে। আর হুমাইরা আবার পরীক্ষার মাধ্যমে তার সঠিক অবস্থাটা তুলে ধরতে পারে।
শিক্ষার্থী সুপ্রিতি ঘোষ বলেন, আমরা শিক্ষার্থী। যদি অন্যের দোষ চাপিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আমরা কিভাবে পড়াশোনায় মন দিব। আমাদের সাথে যে এমনটা হবে না তা তো আমি বলতে পারবো না। আমাদের স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিতে হবে। স্বপ্ন দেখা ভুলে যাব। আমরা চাই সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে বিচার হক।
ছোঁয়ার ফুপু নাজমুন নাহার নিটু বলেন, আমার ভাতিজী পরীক্ষার সময় কারো সাথে কথা বলেনি। তার পরেও তার উপর চাপিয়ে দিয়েছে পর্যবেক্ষক। এতে করে সে মানষিক ভাবে ভেঙে পড়েছে। আমরা এর বিচার চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর সঠিক বিচার করে ছোঁয়া যাতে মেডিকেলে পড়তে পারে সেই ব্যবস্থা করেন।
উল্লেখ, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা দেন হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া। তার অভিযোগ, পরীক্ষা শুরুর ৪০ মিনিট পর তার পাশের এক শিক্ষার্থী থেকে হলের দায়িত্বরত নারী পর্যবেক্ষক কানে থাকা ডিভাইস জব্দ করেন। এ সময় কানে ডিভাইস রাখা মেয়ের সঙ্গে পাশের দুই শিক্ষার্থী হুমাইরা ইসলাম ও আরেকজনের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেন তিনি। পরে তাদের সবার উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলেন ওই পর্যবেক্ষক। কিন্তু ডিভাইস জব্দ করা শিক্ষার্থীর সঙ্গে শেষ পর্যন্ত অন্য দুইজনের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় পরীক্ষা শেষ হবার ৫ মিনিট আগে হুমাইরা ও তার পাশের আরেকজন মেয়েকে নতুন প্রশ্ন ও ওএমআর শিট প্রদান করেন ওই পর্যবেক্ষক। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক কাজী আফজালুর রহমানকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে আর কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডা. কামরুল আলম ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামাল হোসেন। মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের সন্দেহে শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র (ওএমআর) ছেঁড়ার অভিযোগ তদন্তে কমিটি করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আরও খবর: