জাগোকন্ঠ ২ জুলাই ২০২২ , ১১:০০ পূর্বাহ্ণ
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
মামলা তুলে না নিলে মামলার বাদী রোজিনা বেগমকে এসিড মেরে জসলে দেয়ার হুমকি দিয়েছে জেল থেকে ছাড়া পাওয়া মামলার আসামী মোঃ হাবিব আকন। মামলা তুলে না নেয়ার প্রতিশোধ নিতে মামলার বাদী দুই ভাই এমাদুল হাওলাদার ও রেজাউল হাওলাদারকে ধরে নিয়ে বেঁধে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়েছে হাবিব আকন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। শনিবার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে হাবিব আকনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন রোজিনা। হাবিব আকনের ভয়ে মামলার বাদী রোজিনা বেগম পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে আরো অভিযোগ করেন তিনি।
জানাগেছে, ২০১৭ সালে তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের রোজিনা বেগম, আছিয়া বেগম, আব্দুল হক মিয়া ও আশ্রাব আলীর কাছ থেকে সরকারী জমি বন্দোবস্থ দেয়ার কথা করে প্রতারনা করে ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় একই গ্রামের হাবিব আকন। গত পাঁচ বছরে ওই জমির বন্দোবস্থ দেয়নি। এ টাকা ফেরত চাইতে গেলে ভুক্তভোগীদের মিথ্যা মামলা ও জীবন নাশের হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন আছিয়া বেগম। অভিযোগ রয়েছে হাবিব আকন এলাকার অর্ধ শতাধিক লোকের কাছ থেকে সরকারী জমি বন্দোবস্থ দেয়ার প্রলোভন দেখিলে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ঘটনায় এ বছর ১৭ জানুয়ারী রোজিনা বেগম বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাবিব আকনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় হাবিব আকন ৭ দিন জেল হাজতে ছিলেন। গত জুন মাসে তিনি হাজত থেকে বের হন। হাজত থেকে বের হয়েই তিনি মামলার বাদী রোজিনা বেগমকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। রোজিনা অভিযোগ করেন, হাবিব আকন জেল থেকে বের হয়েই মামলা তুলে না নিলে তাকে এসিড মেরে জলসে দেয়া হুমকি দেয়। কিন্তু রোজিনা ওই মামলা তুলে নেয়নি। এর প্রতিশোধ নিতে গত বুধবার দুপুরে হাবিব আকনের নেতৃত্বে বাবুল হাওলাদার, জাহাঙ্গির ও হিরন হাওলাদারসহ ২৫—৩০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী মামলার বাদী মোসাঃ রোজিনা বেগমের ভাই এমাদুল হাওলাদার ও তার চাচাতো ভাই রেজাউলকে তুলে ইউনুস খাঁনের বাড়ীতে নিয়ে যায়। ওইখানে নিয়ে তাদের রশি দিয়ে বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে মামলার বাদী রোজিনা বেগম ৯৯৯ ফোন দেয়। তুলে নেয়ার তিন ঘন্টা পরে পুলিশ ওই বাড়ী থেকে বাঁধা রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। পরে ওইদিন রাতে তাদের আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। গত চার দিন ধরে তারা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এদিকে এ ঘটনার চারদিন পেরিয়ে গেলেও হাবিব আকন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে রোজিনা থানায় মামলা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ তার। তাদের ভয়ে রোজিনা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে আরো অভিযোগ করেন তিনি।
মামলার বাদীর ভাই এমাদুল হাওলাদার বলেন, মামলা তুলে না নেয়ায় আমার বোনের প্রতিশোধ নিতেই হাবিব আকন তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে ধরে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। পুলিশ উদ্ধার না করলে আমাকে মেরে ফেলতো সন্ত্রাসীরা। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
মামলার বাদী রোজিনা বেগম বলেন, হাবিব আকন জেল থেকে বের হয়েই আমাকে মামলা তুলে নিয়ে বলে। আমি মামলা তুলে না নিলে আমাকে এসিড মেরে জলসে দেয়ার হুমকি দেয় হাবিব। আমি মামলা তুলে না নেয়ায় হাবিব আকন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার দুই ভাইকে তুলে নিয়ে মারধর করেছে। তিনি আরো বলেন, হাবিব আকনের ভয়ে আমি পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমার ভাইকে মারধরের ঘটনায় মামলা করতে পারছি না। আমি পুলিশ প্রশাসনের সহযোগীতা চাই।
অভিযুক্ত হাবিব আকনের মুঠোফোনে (০১৭৬৫৭৮০৩৩৮) বারবার যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
তালতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসের অপু বলেন, বিষয়টি জানি। এখানো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।