জাতীয়

ব্যাবসা-বাণিজ্যে আন্তঃসীমান্ত কাগজবিহীন পরিকল্পনায় বাস্তবায়ন দরকার

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ৫ এপ্রিল ২০২৩ , ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ফেরদৌস ওনু :

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে (Cross-Border Paperless Trade) কাগজপত্র বিহীন আন্তঃসীমান্ত পরিকল্পনার কার্যকর বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। গতকাল বুধবার এক হোটেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এডিবি এবং এসকাপ এর যৌথ আয়োজনে ‘National Validation Workshop on the Update of the Readiness Assessment for Cross-Border Paperless Trade: Bangladesh’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মোঃ মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. জিয়ানবো নিম (Mr. Jiangbo Ning) এবং এসকেপের এর অর্থনীতি বিষয়ক অফিসার মিজ সু হেয়ুন (Ms Soo Hyun Kim) এ কর্মশালায বক্তব্য রাখেন। এদিনের কর্মশালায় বক্তারা আরও জানান, বাংলাদেশ বরাবরই ডিজিটাল বাণিজ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সফলভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু ডিজিটাল বাণিজ্য বিচ্ছিন্নভাবে হচ্ছে। আদতে এটা অত্যন্ত খুশির খবর যে ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যকে একক প্ল্যাটফর্মে আনার এবং সুষ্ঠভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি ডিজিটাল ট্রেড সেল প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একটি ডিজিটাল ট্রেড গাইডলাইনও তৈরি করেছে। ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যে যা সহায়ক ভূমিকা রাখছে। নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও দেশের সার্বিক অবস্থান মূল্যায়ন করার মাধ্যমে এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য রোড ম্যাপ প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এছাড়া এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জরুরী ।

চুক্তির সফল বাস্তবায়নের ফলে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যকে একদিকে যেমন সহজতর করবে অন্যদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত তুলে ধরেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ইশতেহার ২০০৯ এ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা করা হয়েছিল। যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার দেশকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এই ধারণাটি বাস্তবায়নের জন্য নতুন নিয়ম, প্রবিধান ও আইন সংস্কার ও প্রবর্তন করছে। কাগজবিহীন আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশ একধাপ এগিয়ে নিবে বলে জানান তিনি।

সিনিয়র সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই অর্থনৈতিক অর্জনের সাফল্যে এলডিসি থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত হয়েছে। করোনা মহামারীর আগ অমুহূর্তে দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮.১৫ তে পৌঁছে ছিল যা বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছিলো। করোনা মহামারীর সংকট শেষ হতে না ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে পৃথিবীব্যাপী অর্থনৈতিক টালমাটালের মধ্যে রয়েছে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। দিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও ৩৬ টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৬৫ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, আন্তঃসীমান্ত পণ্য স্থানান্তরে বাণিজ্য লেনদেনের খরচ কমানো এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মূল্য সুশৃঙ্খলে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ২০১২ সালে ইকোনোমিক এন্ড সোসসোস্যাল কমিশন ফর এশিয়া এন্ড এশিয়া প্যাসিফিক (এসকাপ) ক্রস বর্ডার ট্রেডের জন্য একটি গবেষণা করে।

পরবর্তীতে ক্রস বর্ডার পেপারলেস বাণিজ্যের সুবিধার্থে একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দীর্ঘ সফল আলোচনার পর ১৯ মে ২০১৬ সালে এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে বাণিজ্যের সুবিধার্থে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি (CPTA) গৃহীত হয়। বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল বাণিজ্য সহজীকরণ ব্যবস্থার পদক্ষেপের বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশ ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ চুক্তি অনুসমর্থন করে এবং ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হয়।

আরও খবর: