দেশজুড়ে

প্রধান শিক্ষকের ভুলে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারলেন না মেহেদি

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ১ মে ২০২৩ , ৩:২৯ পূর্বাহ্ণ

রংপুরের মিঠাপুকুরে প্রধান শিক্ষকের ভুলের কারণে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারলেন না মেহেদি হাসান নামে এক শিক্ষার্থী। উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের রূপসী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মেহেদি হাসান রূপসী ফতেপুর গ্রামের দিনমজুর মোক্তারুর রহমানের ছেলে।

এ ঘটনায় পরীক্ষার আগের দিন শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হককে এলাকাবাসী অবরুদ্ধ করে রেখেও কোনো লাভ হয়নি। রোববার (৩০ এপ্রিল) রাণীপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বাগবিতণ্ডা হয়।

এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছে ওই শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেহেদি এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ বাবদ ২ হাজার ৮০০ টাকা প্রদান করে প্রধান শিক্ষকের কাছে। এছাড়াও বোর্ডে যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা প্রদান করা হয়। ফরম পূলণ করার পরও রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পায়নি মেহেদি হাসান।

ওই বিদ্যালয়ের বাকিদের প্রবেশপত্র চলে এলেও তার প্রবেশপত্রের কোনো খবর নেই। প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপত্র চাইলে আজ না কাল চলে আসবে বলে টাল-বাহানা করতে থাকে। পরীক্ষার আগের দিন হলে প্রবেশপত্র পেয়ে যাবে বলে মেহেদিকে আশ্বাস দেন ওই শিক্ষক। পরে সে পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় জানতে পারে তার ফরম পূরণ করা হয়নি।

এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে অত্র বিদ্যালয়ে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল হককে অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী। একপর্যায়ে সেখানে বিশৃঙ্খলাসহ ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। পরে বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করলে তার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পূরণ করেছি। প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রবেশপ্রত্র চাইলে তিনি আজ না কাল চলে আসবে বলে টাল-বাহানা করতে থাকেন। পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় তিনি আমাকে ফোন করে বলে আমার ফরম পূরণ হয়নি। এজন্য এডমিট কার্ড আসেনি। আমি পরীক্ষা দিতে পারব না।

মেহেদি হাসানের বাবা মোক্তারুর রহমান বলেন, ১৬ বছর ধরে দিনমজুরি করে আমার ছেলের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছি। ফরম ফিলাপের টাকা ছাড়াও বোর্ডে যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের ভুলে আমার ছেলে পরীক্ষা পারেনি এর দায় তাকেই (প্রধান শিক্ষক) নিতে হবে।

ওই শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই মোরছালিন মিয়া বলেন, সন্ধ্যায় খবর পেলাম মেহেদি হাসান এবার পরীক্ষা দিতে পারবে না। সে কেন পরীক্ষা দিতে পারবে না বিষয়টি জানতে আমরা স্কুলে যাই। সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আমাদের কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। লোকজন উত্তেজিত হলে সেখানে সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

রূপসী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হক বলেন, মেহেদি হাসানের ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে ভুল হয়েছে। তার সঙ্গে কথা বলে আগামীতে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বলা হয়। একপর্যায়ে সে এলাকাবাসীকে নিয়ে স্কুলে এসে হট্টোগোল শুরু করে। সন্ধ্যা থেকে অনেক রাত পর্যন্ত তারা স্কুলে অবস্থান করে। তারা রোববার রাণীপুকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে আবারও আমার সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব) রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি মৌখিক জেনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর: