অপরাধ

গোপালগঞ্জে জাল সনদে প্রধান শিক্ষকের চাকরি

  জাগোকন্ঠ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ

মো: আমিন হোসাইন:

প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলা গোপালগঞ্জ মুকসুদপুর উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া বাঘু মৃধা উচ্চ বিদ্যালয়। বিভিন্ন সময় শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন সৎ মানুষ হওয়ার। নিজের পরিচয় দেন আদর্শ একজন শিক্ষক হিসেবে। কিন্তু তারই বিএড পাসের সনদটি জাল। এই জাল সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২৪ বছর ধরে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় ২০০০ সালে তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস, দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

গোলাম মাওলা ঝিনাইদহ জেলার বাসিন্দা। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে যোগদান করেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে। তার ইনডেক্স নম্বর ও আছে । ১৯৯৯ সালে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হলে গোপন কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই বছরের ২৪ মার্চ ১০ বছরের অভিজ্ঞতা ছাড়াই জাল সনদে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হন। এ সময় যেসব সনদ তিনি দিয়েছেন এতে দেখা যায়, এসএসসিতে দ্বিতীয়, এইচএসসিতে তৃতীয়, বিএ পরীক্ষায় তৃতীয় এবং বিএড দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এসব সনদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গোলাম মাওলা বিএ পাস করলেও বিএড পাস করেননি। তবে পরীক্ষা দিয়ে তিনি পাস করতে পারেননি।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নিয়োগের শিক্ষা মনন্ত্রণালয়-মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর- সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকল পরিপত্র/বিজ্ঞপ্তি/নীতিমালা/নির্দেশনা/স্মারকে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ না করে সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতকসহ বিএড পাস হতে হবে এবং ১০ বছরের সহকারী শিক্ষক হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সমগ্র শিক্ষাজীবনে ১টির বেশি তৃতীয় বিভাগ (৩য় বিভাগ/শ্রেণি/সমমানের জিপিএ) গ্রহণযোগ্য হবে না।

অভিযোগকারী মিতা আহমেদ (প্রতিষ্ঠাতা বেলায়েত হোসেন মৃধার কন্যা) বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মাওলা জাল সনদ দিয়ে ২৪ বছর পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতেছেন। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় ১০ বছরের অভিজ্ঞতা এবং বি এড সনদ থাকতে হয় যা তার নেই । বিএড পাসের জাল সনদ দিয়ে ১৯৯৯ সালে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন।

এছাড়াও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ বাণিজ্যসহ দুর্নীতি ও কুকর্মের অনেক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব ঘটনা উল্লেখ করে আমার বাবা ২০০০ সালে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিস, দুর্নীতি দমন কমিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছি। অদৃশ্য কারণে এখন পর্যন্ত কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম মাওলা বলেন, সমাজের একটি কুচক্রী মহল আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

গোপালগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে দেখে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো ।’

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আশেকুল হাসান বলেন, ‘জাল সনদে চাকরি করে থাকলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এর চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এ অভিযোগের তদন্ত চলছে। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে।’

বিস্তারিত আসছে পরবর্তী প্রতিবেদন..

আরও খবর: