দেশজুড়ে

একটু বৃষ্টি হলেই নির্ঘুম রাত কাটে আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ২৪ মে ২০২৩ , ৪:০৩ অপরাহ্ণ

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা স্বস্তিতে নেই। একটু বৃষ্টি হলেই প্রকল্পের ঘরগুলোতে টিনের ফুটো দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ে। নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের। চালের টিনে মরিচা ধরে বিভিন্নস্থানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছিদ্র। সেই ছিদ্র দিয়ে ঘরে পানি ঢুকে ভিজে যায় ঘরের আসবাবপত্র, চাল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজণীয় পণ্য সামগ্রী। 

ঘরের জিনিসপত্র রক্ষায় টিনে পলিথিন দিয়ে পানি আটকানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলে তাদের। তবুও মেলে না স্বস্তি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি হলেই ঘর ও ঘরের বাইরে কাদায় একাকার হয়ে যায়। এতে ঘরে থাকা ও বাইরে হাটাচলায় উভয়ে পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। স্যানিটেশনেরও বেহাল অবস্থা। কিছু ঘরে টয়লেট থাকলেও অল্পদিন ব্যবহারে ভেঙেচুরে নষ্ট হয়ে গেছে। সেখানে থেকে অনবরত ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বাধ্য হয়ে অনেকে খোলা স্থানে মলত্যাগ করছেন।

জানা গেছে, ২০০৫ সালে ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনি গ্রামে সরকারি খাস জমিতে অসহায় হতদরিদ্র ১০০টি পরিবারের জন্য ১০টি ব্যারাক হাউজ নির্মাণ করা হয়। ব্যারাকে পাঁচ পরিবারের জন্য একটি করে টয়লেট এবং ১০ পরিবারের জন্য একটি নলকূপ নির্মাণ করা হয়। যার অধিকাংশ টয়লেট ও নলকূপগুলো এখন নষ্ট ও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দিন দিন একেবারে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় নিরুপায় হয়ে আবাসন প্রকল্প ছেড়ে চলে যাচ্ছে অনেক পরিবার।

আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা পারভীন আক্তার জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলো নির্মাণের সময় লোহার ফ্রেমের ওপর টিনের ছাউনি ও টিনের বেড়া দেওয়া হয়েছিল। মেরামত না হওয়ায় টিনের ছাউনি ও চারপাশের বেড়ার টিন নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। মরিচা ধরা টিন ফুটো হয়ে এসব স্থান দিয়ে ঘরের ভেতর পানি ঝরে। আমরা কোনোমতে পলিথিন দিয়ে আছি।

রাজিয়া বেগম বলেন, একটু বৃষ্টি এলেই ঘরের ভিতরে চাল দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পড়ে। পলিথিন মুড়ি দিয়ে ঘরে থাকতে হয়। শিশু ও বৃদ্ধা নিয়ে নির্ঘুম রাত পার করতে হয়।

আলী হোসেন বলেন, এই আবাসন প্রকল্পের টিউবওয়েলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। টয়লেটের ট্যাঙ্কি ভেঙে গেছে। চারদিকে শুধু দুর্গন্ধ ছড়ায়। একটু বৃষ্টি হলে থাকার মতো অবস্থা থাকে না। অন্য কোথাও যাওয়ার স্থান না থাকায় বাধ্য হয়ে এখানে বসবাস করছি।

আবাসন প্রকল্পের সভাপতি আমির হোসেন জানান, প্রকল্পের বাসিন্দাদের কোনো আয়বর্ধক কাজকর্ম নেই। সবাই দিনমজুরি, কৃষিকাজ ও অটোরিকশা চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। অনেকের ঘরে আয় করার মত লোক না থাকায় বয়স্ক, বিধবা ভাতা ও সরকারি ত্রাণ তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। এ অবস্থায় ঘর মেরামত করার মতো অর্থ তাদের হাতে নেই। আবাসন প্রকল্পের ব্যারাক হাউজগুলো দ্রুত সংস্কার করার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যদি কোনো বরাদ্দ আসে তা হলে ঘরগুলো মেরামত করা হবে।

আরও খবর: