অপরাধ

মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যায় ২ জনের যাবজ্জীবন

  জাগো কণ্ঠ ডেস্ক ৩১ আগস্ট ২০২২ , ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

প্রতীকি ছবি

২০২১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেগরিয়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয় ১৭ বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্র আয়বুর রহমান খোকন ওরফে আকাশ। ১২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এলাকায় বাড়ির ছাদে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্র আকাশ হত্যা মামলায় নারীসহ দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

জেলা ও দায়রা মুন্সি মোহাম্মদ মশিয়ার রহমানের আদালত বুধবার সকালে এ রায় দিয়েছেন। এ সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হবিগঞ্জের ছোট বহুলা গ্রামের ২০ বছর বয়সী জান্নাতী বেগম ওরফে শাবনুর ও তেঘরিয়া এলাকার ৫৫ বছর বয়সী সিদ্দিক আলী।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেগরিয়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয় ১৭ বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্র আয়বুর রহমান খোকন ওরফে আকাশ। ১২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের এলাকায় বাড়ির ছাদে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা চারজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। ৩০ নভেম্বর আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। তদন্তে বেরিয়ে আসে নিহত আকাশের বড় ভাই নজরুলের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা পেতেন মামলার আসামি সিদ্দিক আলী৷ পাওনা টাকা দিতে অস্বীকার করায় আকাশকে হত্যার পরিকল্পনা করে সিদ্দিক।

তার পরিকল্পনা মতো জান্নাতি, সাবিনা, সুমন নামে তিনজনকে ভাড়া করে। তাদের মধ্যে জান্নাতি নিহত আকাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরাব এলাকায় সুহর আলীর বাড়িতে ঘরভাড়া করে আকাশকে নিয়ে আসে জান্নাতি। পরে সেখানে আসে অন্য আসামিরা। ভাড়া বাসায় নুডলসের সঙ্গে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে খাইয়ে প্রথমে আকাশকে অচেতন করা হয়। এরপর তাকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে।

মামলার আসামিরাও আদালতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান আরও জানান, মামলার চার আসামির মধ্যে জান্নাতি ও সিদ্দিক নামে দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নিদের্শ দেয়া হয়েছে। মামলার অপর দুই আসামি সাবিনা ও সুমন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে আলাদাভাবে অভিযোগ পত্র দেয় পুলিশ। এ কারণে এই দুই আসামির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবে এই আদালত।

নিহত আকাশের বাবা আবদুল হাকিম জানান, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে খুঁজে না পেয়ে থানায় জিডি করেন তিনি। এরপর পুলিশ জানায় রূপগঞ্জে ছেলের মরদেহ পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে হত্যার কষ্ট শইতে না পাইরা ওর মায়ও মইরা গেছে। আমার ছেলেরে যারা হত্যা করছে তাদের শাস্তির জন্য আমি মামলা করছি। আমি আদালতে বলছি ন্যায় বিচার চাই। আজকে আদালত মামলার রায় দিছে। আমি ভাবছিলাম আদালত আসামিগো ফাঁসি দিব, কিন্তু যাবজ্জীবন হইছে।’

আরও খবর: