জাগোকন্ঠ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ২:২৯ অপরাহ্ণ
ফেরদৌস ওনু: আজ শনিবার বিকেলে সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, বিমূর্ত বা অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ICH) আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক উপাদানের ভান্ডার যা গত প্রায় ৫০০০ বছর ধরে এ অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ইতিহাস দ্বারা লালিত হয়ে আসছে।
বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষার তাগিদে বাধ্যবাধকতা ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে বাংলাদেশ ২০০৯ সালে এর প্রক্রিয়া শুরু হয় ICH সুরক্ষার জন্য ‘ইউনেস্কো কনভেনশন ২০০৩’ স্বাক্ষর করে এবং ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে আমাদের বাউল গান (২০০৯), ঐতিহ্যবাহী জামদানি বুননশিল্প (২০১৩), পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬) ও সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি বুননশিল্প (২০১৭) ইউনেস্কোর বিমূর্ত বা অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত আমরা বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জাতীয় ইনভেন্টরি তৈরি করতে পারিনি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আমাদের বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনলাইন জাতীয় ইনভেন্টরি তৈরি করতে পেরেছি যেটি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শাহবাগ যাদুঘরে শুভ উদ্বোধন হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী শনিবার বিকালে রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনলাইন জাতীয় ইনভেন্টরির শুভ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জাদুঘর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, দেরিতে হলেও আমরা আমাদের বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনলাইন জাতীয় ইনভেন্টরি তৈরি করতে পেরেছি। সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই জাতীয় জাদুঘরকে যারা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংক্রান্ত জাতীয় ইনভেন্টরি প্রস্তুত কাজে লিড এজেন্সি হিসাবে কাজ করেছে এবং যাদের প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। আরও ধন্যবাদ জানাই ইউনেস্কো’র accredited বেসরকারি সংস্থা ‘সাধনা’ ও ‘Consortium for ICH Pedia Bangladesh’ কে যারা এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সমন্বয় সাধন করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের অফিসার-ইন-চার্জ সুজান ভাইজ। সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাধনা’র কর্ণধার লুবনা মরিয়ম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় জাদুঘর এর কিপার আসমা ফেরদৌসী।
কে এম খালিদ, পরে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ‘ র বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব (প্রধান) মিলনায়তনে বাংলাদেশের বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনলাইন জাতীয় ইনভেন্টরির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এছাড়া প্রতিমন্ত্রী জাতীয় জাদুঘর এর প্রধান মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ‘Rural Craft & Cultural Hubs of West Bengal’ এর সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত চার দিনব্যাপী (৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ০৩ অক্টোবর ২০২৩) দুই বাংলার কারুকলা উৎসব ও প্রদর্শনী ‘সম্পদ’ এর উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের safeguarding এবং ইউনেস্কোর প্রতিনিধিত্বমূলক অন্তর্ভুক্তি তালিকা তৈরির লক্ষ্যে এর একটি গাইডলাইন অনুসরণ করে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্বলিত হালনাগাদ করে জাতীয় ইনভেন্টরি থাকা বাধ্যতামূলক সেইসঙ্গে বাংলাদেশের সাথে সমন্বয় করে বর্তমান সময়ে একটি অনলাইন ইনভেন্টরি সফটওয়্যার ও মোবাইল এ্যপ তৈরির মাধ্যমে এ ঐতিহ্যকে তথ্যভান্ডারে তালিকাভুক্ত করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।