শাহরিয়ার কবির,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীবৃন্দ উপ-সচিব পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়ে অবসর গ্রহণ করেন। মন্ত্রনালয়ের বাইরে সারা দেশে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারিগণ কোন রকম পদোন্নতি, পদ পরিবর্তন ও গ্রেড উন্নয়ন ব্যতিত দীর্ঘ দিন একই পদে থেকে অবসর গ্রহণ করেন, যা কারোই কাম্য নয়। ১৫ নভেম্বর থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতি ( বাকাসস ) কর্তৃক কর্মবিরতি পালন করে আসছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা (বাকাসস) এর সভাপতি মোঃ মাসুদ রানা জাগোকণ্ঠকে বলেন, আমরা ২০০১-২০২০সন পর্যন্ত এদাবী পূরণে আন্দোলন করে আসছি। সচিবালয়ের কর্মচারীগণের দাবীগুলো বাস্তবায়ন হলেও সরকার বিভগীয় ও জেলা-উপজেলাসহ মাঠ পর্যায়ে কর্মচারীদের দাবীগুলো বাস্তবায়ন করছেন না। তিনি দাবীগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সংগঠনের (বাকাসস-এর) সকলের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান। তিনি আর বলেন, মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে এতদসংক্রান্ত সার সংক্ষেপ অনুমোদন করা সত্ত্বেও অদ্যাবধি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে এ সংক্রান্ত কোন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। যে কারণে আজ মাঠ পর্যায়ে কর্মচারীগণের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। এ সময় তিনি বলেন, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাবী বাস্তবায়ন না হলে আগামী ৫ ডিসেম্বর ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হবে। সেখান থেকে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম এ কথা বলেন, এদেশের মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মচারীবৃন্দ একই যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যাক্তি একই পদে থেকে পদোন্নতি পেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা এমনকি উপসচিব পর্যন্ত পদোন্নতি পেয়ে থাকেন।একই সঙ্গে পদোন্নতি ও বেতন গ্রেড পেয়ে অবসর গ্রহণ করেন। অন্যদিকে বিভাগীয় কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের ১১-১৬ গ্রেডের কর্মচারীগণ পদবী পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নীত করণ থেকে বঞ্চিত হন। তিনি বলেন, আজ সারাদেশে ১১-১৬ গ্রেডের কর্মচারীগণ সচিবালয়ের কর্মচারীগণের ন্যায় পদবী পরিবর্তন ও গ্রেড উন্নীত করণের দাবিতে গত ১৫ নভেম্বর থেকে সকাল ৯টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছে। এ কর্মসূচী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আরো বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বিষয়টি সহানুভূতির সহিত বিবেচনা করবেন। একই সঙ্গে পদ, পদবী পরিবর্তন ও বেতন গ্রেড উন্নীত করণ করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য, এ সময় তাৎক্ষনিক ভাবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের “নেজারত শাখা ও এস এ শাখায় গিয়ে কোন কর্মচারীকে পাওয়া যায় নি।
কালেক্টরেট সহকারীগণের কর্মবিরতির কারণে সংশ্লিষ্ট সরকারী অফিস আদালতে কাজে এক রকম ধস নেমেছে। ফলে অফিসগুলোতে কর্মশৃঙ্খল ভেঙে পড়েছে । ভুক্তভোগীরা জানান, এই কর্মবিরতির ফলে ভূমি অফিস গুলোতে ডি.সি.আর সরবরাহ বন্ধ রয়েছে, জমির খারিজ-খতিয়ান উত্তোলন করতে পারছেন না। অনেকে খারিজ-খতিয়ানের অভাবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা-জমি সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারছেন না। অনেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করতে না পারায় বিভিন্ন ভাবে কাজে বাঁধা গ্রস্থ হচ্ছেন। ডি.সি.আর, খারিজ, খতিয়ান বন্ধ থাকায় সেবা গ্রহিতারা তাদের কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না। সেবা গ্রহিতাদের মিস্ কেস, নামজারি, অর্পিত সম্পত্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে পরিত্যক্ত সম্পত্তি, খাসজমি বন্দোবস্ত হচ্ছে না, ডি.সি.আর সরবরাহসহ বিভিন্ন কার্য়ক্রম বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রেকর্ড রুম হতে কোন রকম খতিয়ান আদান-প্রদান হচ্ছে না, সাধারণ শাখায় সকল প্রকার কাজ বন্ধ রয়েছে। এক কথায় জেলা প্রশাসকের সকল শাখা হতে সাধারণ জনগন সকল প্রকার সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ।
Leave a Reply